Advertisement


মহেশখালীঃ পোস্টারের রাজনীতি ও রাজনীতির পোস্টার (!)


আ ন ম হাসান।।
মহেশখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে নানান কথার নানান ঢংয়ে চেনা-অচেনা  মুখের বাহারী রঙের পোস্টারে ছেয়ে যাচ্ছে চারপাশ ৷ দেওয়ালে-দেওয়ালে পোস্টার সাঁটানোটা  প্রতিযোগীতায় রূপ নিয়েছে ৷ আর এই প্রতিযোগীতার দৌঁড়ে বাদ পড়েনি প্রশাসনিক ভবন, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ধর্মীয়  স্থাপনাও ৷ 

ফলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা ব্যাহতের পাশাপাশি সৌন্দর্য হানিও ঘটছে ৷ সংরক্ষিত এলাকাসমূহে পোস্টার সাঁটানোতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা আমলেই নিচ্ছে না পোস্টার নেতারা ৷

মহেশখালীর উপজেলা প্রশাসনের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে দেখা যায়, নেতাদের বিভিন্ন পোস্টারে সয়লাব চারিদিক ৷ দেওয়ালে-দেওয়ালে পোস্টার  সাঁটানোর কাজ করে যাচ্ছে বেশিরভাগই অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু-কিশোর ৷ পছন্দের ব্যক্তির পোস্টার সবার ওপরে সাঁটানো যেন একপ্রকার প্রতিযোগীতার লক্ষ্যবস্তু। জনৈক নেতার পক্ষে প্রশাসনিক ভবনের দেওয়ালে, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ঝুঁকি নিয়ে পোস্টার লাগাতে দুই কিশোরকে দেখা যায় ৷কোন ধরনের সেফটি ব্যবস্থা ছাড়াই তাদেরকে কাজে ব্যবহার করছে জনৈক নেতাদের পক্ষের লোকজন ৷তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদাসীনতার ছাপ স্পষ্ট লক্ষ করা যায়। ফলে অসাবধানতায় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ৷

আসন্ন স্থানীয় ইউপি ও পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাহারী পোস্টারের মুখগুলো দেখে মৌসুমী ও বাৎসরিক নেতা বলে অনেকেই ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেন, 'মসজিদের দেওয়ালে পোস্টার লাগানো যাবে কি? আমাদের দেশের অনেক মসজিদেই একটি দৃষ্টিকটু বিষয় দেখা যায়। সেটি হচ্ছে- মসজিদের দেওয়ালে নানান ধরনের পোস্টার এবং প্রচারপত্র সাঁটানো। ওয়াজ-মাহফিল থেকে শুরু করে রাজনীতি; এমনকি ব্যবসায়িক প্রচারপত্রও মসজিদের দেওয়ালে নির্বিঘ্নে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা হচ্ছে নাকি ক্ষুণ্ন হচ্ছে; বিষয়টিও কেউ ভেবে দেখে না। 

মসজিদের দেওয়ালে ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কিংবা ব্যাবসায়িক যেকোনো প্রচারপত্র বা পোস্টার লাগানো সম্পূর্ণ হারাম। শরয়ি বিশেষজ্ঞদের মতে, মসজিদের দেওয়াল কোনোভাবেই কেউ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। এই নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে মসজিদের দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো হারাম ফতোয়া দিয়েছেন আলেমরা।

দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১২ এর ৩নং ধারার ৪ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে না ৷  এই আদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানোর জন্য প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা স্থান নির্ধারণ করে দিবে ৷ এবং উক্তরূপে নির্ধারিত স্থানে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে ৷ 

তবে শর্ত থাকে যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, উল্লিখিত নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্ট ফি প্রদান সাপেক্ষে, দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে ৷ বাস্তবে এ সকল নীতিমালা বা আদেশের গুরুত্ব কোথাও  লক্ষ করা যায়নি ৷

এবিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহফুজর রহমানকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ব্যাপারটি আমার নজরে এসেছে ৷ দ্রুত সময়েই যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।