Advertisement


ছোট মহেশখালীতে ভাই এর হাতে ভাইকে খুন করার চেষ্টা

বাবুল আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রাপ্ত ব্যক্তি

মাহবুব রোকন ও আ ন ম হাসান ।। ছোট মহেশখালী তেলীপাড়া এলাকায় মাদক সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে যুবলীগ নেতা আপন বড় ভাইয়ের হাতে শ্রমীকলীগ নেতা ছোট ভাই ছুরিকাহত হয়েছে। মুমূর্ষু মো. নাছির উদ্দিন বাচ্চুকে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানাগেছে। হামলাকারী ভাই বাবুল এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত অপরাধি। সে পুলিশের তালিকার পলাতক আসামি, তাকে আগে থেকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের চেষ্টা চলছিল -জানিয়েছেন ওসি আব্দুল হাই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে আজ (৩ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের তেলীপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

সূত্র জানায় -স্থানীয় জনৈক মো. ইসলামের পুত্র নেজাম উদ্দিন বাবুলের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যাবসা, গরু মহিষ চুরি, ডাকাতি, জুয়ার কারবার চলে আসছিল ৷ তার বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায় ৷ 

বাবুল ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি অখ্যাত একটি নিউজ পোর্টাল এর সংবাদদাতার পরিচয় দেয় বলেও সূত্র জানায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন -বাবুল স্থানীয় একটি মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থেকে এলাকায় নানা অপকর্ম করে আসার বিষয়টি ছোট ভাই নাছিরের পছন্দ হতো না। নাছির বার বার ভাই এর এমন আচরণের প্রতিবাদ জানালে আপন ভাই বাবুল ও তার মাদক সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে নাছির।

আজও এমন এক মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে বাড়াবাড়ির জের ধরে বাবুলের নেতৃত্বে সাঙ্গপাঙ্গরা প্রকাশ্যে অবৈধ বন্দুক ও ছুরি নিয়ে নাছিরের উপর হামলা করতে আসে এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার উপর হামলা করে। হামলাকারীরা তাকে বন্দুকের নল দিয়ে আঘাত করে। নাছির তাদের কবল থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে ভাই বাবুল তাকে পেছন থেকে ছুরিকাহত করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় অহতকে উদ্ধার করে প্রথমে মহেশখালী ও পরে কক্সবাজার হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানাগেছে।

[ আহত মো. নাছির উদ্দিন বাচ্ছু কর্মসূত্রে প্রায় সময় চট্টগ্রাম থাকেন এবং তিনি চট্টগ্রাম চাঁদগাঁও থানা এলাকায় জাতীয় শ্রমীকলীগের কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদককের দায়িত্বে আছেন বলে জানাগেছে। ]

পরে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ঘটনার মূল হোতা বাবুলকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে। বাবুল এলাকায় 'টাইগার বাবুল' হিসেবে পরিচিত বলেও সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হাই মহেশখালীর সব খবরকে জানান -হামলাকারী বাবুল এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত অপরাধি মর্মে পুলিশের কাছে তথ্য ছিলো। তার বাবাই তার অপরাধের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেন। এর পর থেকে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছিল। আজ ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাবুলকে আটক করে।

ওসি আরও জানান -হামলা করতে একাধিক লোক আসা ও বন্দুক নিয়ে হামলা চালানোর বিষয়ে পুলিশকে কেউ তথ্য বা অভিযোগ দেন নি। এ নিয়ে অাহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ থানায় মামলা নিয়ে আসেনি (বিকেল ৫টায় এ রিপোর্ট আপডেট করা পর্যন্ত)। তবে বাবুল মদক সংক্রান্ত একটি মামলার আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামি। মামলা না হলেও এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ও আজকের ঘটনার বিষয়ে আলাদা নোট দিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হবে। -জানান ওসি।

প্রসঙ্গতঃ ২০১৯ সালে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বাবুল অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিল পুলিশের হাতে। সে বার প্রায় দেড়বছর জেল খেটে ছোট ভাই নাছিরের  সহযোগিতায় ছাড়া পায় জেল থেকে। এরপর হতে ভাইকে অপরাধের পথ হতে ফিরিয়ে আনতে নানা চেষ্টা চালায় ছোট ভাই নাছির ৷ -জানান স্থানীয়রা।

ঘটনার পর থেকে এলাকায় শোক ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকার শান্তিপ্রিয় লোকজন বাবুলের সিন্ডিকেটের লোকজনকেও আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তির বন্দোবস্ত করার দাবি জানাচ্ছেন।