Advertisement


ইয়াবার অনুকূলে মহেশখালী উপকূল


ফুয়াদ মোহাম্মদ সবুজ।। মরণঘাতী ইয়াবা এখন অনেকটা মহেশখালী উপকূলের অনুকূলে চলে এসছে। উপজেলা সদরে থানা প্রশাসনের নাকের ডগায় ইয়াবার ছড়াছড়ি। ইয়াবা প্রবেশের ত্রিমুখী এই উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে হাত বাড়ালেই এখন এই মাদক পাওয়া যায়। মহেশখালীর চরাঞ্চল এলাকা বিশেষ করে মহেশখালী পৌরসভার চরপাড়া, কুতুবজোম ইউনিয়নের চরপাড়া, সোনাদিয়া, তাজিয়াকাটা, ঘটিভাঙ্গা, বরদিয়া, হোয়ানকের মোহরাকাটা, কেরুনতলী, টাইমবাজার, ছোটমহেশখালীর মুদিরছড়া, জালিয়াপাড়া, মাতারবাড়ি ও ধলঘাটাকে বলা হচ্ছে ইয়াবার স্বর্গরাজ্য।


এদিকে টেকনাফ ও মায়ানমার থেকে মহেশখালীর স্থল পথে আসার নদীপথ ত্রিমুখী হলেও মুল জেটি ছাড়া আদিনাথ জেটি ও ঘটিভাঙ্গায় প্রশাসনের কর্যকর কোন তৎপরতা না থাকা এ দুই পথ দিয়ে রাতের আঁধারে প্রতিনিয়ত কোটি টাকার ইয়াবার চালান হাতবদল হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। কোটি কোটি টাকার এসব মাদকদ্রব্য চোরাচালানে সরাসরি যুক্ত রয়েছে উপজেলার হাই কমান্ড রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও বড় বড় সিন্ডিকেট।

দেশের সিঙ্গাপুরখ্যাত মাতারবাড়ির প্রকল্পগুলোতে ইয়াবা সিন্ডিকেটে সয়লাব। খুচরা ইয়াবা বিক্রির প্রতিযোগীতা চলছে মাতারবাড়িসহ মহেশখালীর সবকটি মেগা প্রকল্পে। কয়লা বিদ্যুৎ, গভীর সমুদ্র বন্দর, এসপিএম প্রকল্প ও গ্যাস লাইন প্রকল্পে দেশী ও বিদেশী অন্তত ২০ হাজার লোক কাজ করছে। তাদেরকে ঘিরেই জমজমাট চলছে ইয়াবা ব্যবসা। এতে কর্মকর্তা থেকে শুরু করে শ্রমিক পর্যায়ে অধিকাংশ শ্রমিক-কর্মকর্তা ইয়াবা সেবনে জড়িত।

মাতারবাড়ির ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, প্রকল্প এলাকা ঘিরে ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে উঠার বিষয়টি অনেক আগের। বিগত সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা ব্যবস্থা নিলেও কোন কাজ হয়নি। এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ি ও সেবনকারীরা। যারা প্রকল্প এলাকায় কাজ করে তারা মাদক সেবন করছে কিনা নিয়মিত পরিক্ষা করা প্রয়োজনও বলে মনে করছেন তিনি। প্রকল্প এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন কোম্পানী তাদের শ্রমিক কর্মচারীদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিলে মাদক সেবন অনেকাংশে কমে যেত। তা না হওয়ায় তারা অনেকটা বেপরোয়া।

অন্যদিকে সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর মহেশখালী থানার পুরো পুলিশ টীম পরিবর্তন আসে। নতুন এই টীম যোগদানের পর তেমন কোন ইয়াবার চালান উদ্ধার হয়নি। তবে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে আটক করে তারা। সম্প্রতি মহেশখালীর সিকদারপাড়ার সালাহ উদ্দিনের গ্যারেজ থেকে ৬লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে মহেশখালী থানা পুলিশ। এর আগেও রাজধানীর এলিফেন্ট রোড় থেকে লাখ লাখ টাকার ইয়াবাসহ ধরা পড়ে মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার ছেলে নিশান। এছাড়াও ডেইলপাড়া থেকে দেড় লাখ পিছ ইয়াবাসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ।