Advertisement


জয় নিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা


স্পোর্টস ডেস্ক।।
পেছনের তেতো স্বাদকে ভুললে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। কলম্বিয়ার বিপক্ষে সবশেষ তিন দেখায় জয়ের মুখ দেখেনি আর্জেন্টিনা। উল্টো পেতে হয়েছে এক ম্যাচে হারের স্বাদ, বাকি দুটি ড্র।

সেই লক্ষ্যে ৪-৩-৩ ছকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে আর্জেন্টিনা।

শুরুতেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধে কলম্বিয়া সমতায় ফেরালে ১-১ গোলে ম্যাচভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। আর শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে গোলে জয় নিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটল আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের শুরুতে কলাম্বিয়ার বিপজ্জনক স্থানেই বারবার বল নিয়ে গেছে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডরা। যাদের নেতৃত্বে অধিনায়ক মেসি।

এভাবে কয়েকবার আক্রমণের পর ছয় মিনিটের মাথায়ই প্রথম সফলতার মুখ দেখে আর্জেন্টিনা। দূর থেকে ক্রসে গোলপোস্টের খুব কাছাকাছি বল পান মেসি।

কলম্বিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে কাট ব্যাক পাস দেন ডি-বক্সে অরক্ষিত স্থানে দাঁড়িয়ে থাকা লাউতারো মার্তিনেজকে। মুহূর্তেই তা জালে জড়িয়ে দেন ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড।

ম্যাচ শুরু ৩ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আর্জেন্টিনা। কলম্বিয়ার দুই তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন লিওনেল মেসি। দারুণভাবে বল বাড়িয়ে দেন নিকোলাসা গঞ্জালেসকে। কিন্তু তার হেড লক্ষ্যে ছিল না।

তবে এর মিনিট তিনেক পর মার্তিনেজকে দিয়ে ঠিকই গোল উদ্ধার করে নেন মেসি। এই এসিস্টের পর নতুন রেকর্ড স্পর্শ করলন মেসি। তার আগে কোপায় কেউ ৪টির বেশি গোলের পাস বাড়াতে পারেননি।

৯ মিনিটের মাথায় আক্রমণে উঠতে সক্ষম হয় কলম্বিয়া। কুয়াদ্রাদোর দুর্দান্ত এক শট বাঁচিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমি. মার্তিনেজ। ২১ মিনিটের মাথায় ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার লো সেলসো।

ফ্রি-কিকে আর্জেন্টিনার বক্সে বল রাখার চেষ্টা করেন কুয়াদ্রাদো। তবে গঞ্জালেজ বল ক্লেয়ার করেন।

লো সেলসোর কারণে ফের ফ্রি-কিক পায় কলম্বিয়া। ২৫ মিনিটের দিকে তার হাতে বল লাগে। বাঁশি বাজান রেফারি। তবে এমন সুবিধাজনক জায়গা থেকেও ফ্রি-কিক কাজে লাগাতে পারেনি কলম্বিয়া।

৩৬ মিনিটের মাথায় কলম্বিয়ার বারিয়সের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। ৩৮ মিনিটে চমৎকার এক সুযোগ পায় কলম্বিয়া। যা হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হন কোচ ডেভিড ওসপিনা।

কুয়াদ্রাদোর কর্ণার থেকে হেডে গোল করার চেষ্টা করেন ইয়েরি মিনা। তার হেডার ক্রসবার ছুঁয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।

৪৪ মিনিটে ঠিক একইরকম সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। মেসির কর্ণার থেকে হেডে গোল করার চেষ্টা করেন গঞ্জালেজ। ঠিকমতো মাথা ছোঁয়ানও তিনি। কিন্তু কলাম্বিয়ান গোলরক্ষকের দুর্দান্ত সেভে ব্যবধান বাড়াতে গঞ্জালেজ।

প্রথমার্ধে ৪ মিনিট সময় সংযোজিত হয়। রেফারি বাঁশি বাজার ঠিক আগে হলুদ কার্ড দেখেন কুয়াদ্রাদো। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

এক গোল হজম করে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করার আগেই তিনটি পরিবর্তন আনেন কোচ ওসপিনা।

বোরে, তেসিলো ও কুয়েলারকে বসিয়ে কারদোনা, ফাব্রা ও চারাকে মাঠে নামান তিনি। স্কালোনিও মলিনাকে বসিয়ে মন্তিয়েলকে মাঠে নামান।

নতুন তিন বদলি পেয়ে শুরু থেকেই আর্জেন্টিনাকে চেপে ধরে কলম্বিয়া। ৪৮ মিনিটে গোলপোস্ট বরাবর দুর্দান্ত শট নেন ডায়াজ। তা প্রতিহত করেন গোলরক্ষক মার্টিনেজ।

৫৫ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার ফাব্রা। ৫৬ মিনিটে লো সেলসোকে তুলে নিয়ে আর্জেন্তিনা মাঠে নামায় পারেদেসকে। ৫৭ মিনিটে ফ্রি-কিক পান মেসি, তবে তা মাঠের বাইরে চলে যায়।

৬০ মিনিটে জাপাতাকে তুলে নিয়ে মিগুয়েলকে মাঠে নামায় কলম্বিয়া। ৬১ মিনিটে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের চমকে দেয় কলম্বিয়া।

নিজেদের অর্ধ থেকে ফ্রি কিক নেন কারদোনার। দুরন্ত গতিতে দৌড়ে আর্জেন্টিনার ডি-বক্সের কাছাকাছি পৌঁছে বল নিয়ন্ত্রণে নেন ডায়াজ। গোলরক্ষক আর একজন ডিফেন্ডার ছাড়া আর কেউ ছিল না ডিবক্সে। কোনাকুনি শটে মার্তিনেজকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন। ম্যাচে ১-১ সমতা ফেরে কলম্বিয়া।

৬৩ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন মিগুয়েল। ৬৭ মিনিটের মাথায় গঞ্জালেজকে তুলে নিয়ে ডি মারিয়াকে মাঠে নামায় আর্জেন্টিনা। ফের লিড নিতে যে স্কালোনি আক্রমণের ধার বাড়ালেন তা বোঝা গেল।

৬৮ মিনিটে ফ্রি-কিক পায় কলম্বিয়া। কুয়াদ্রাদোর কিক সোজা চলে যায় মার্তিনেজের কাছে। তাতে ছোঁয়া দিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেন স্যাঞ্চেজ। তবে যদিও গোলরক্ষক মার্তিনেজের কারণে তা আর পেরে ওঠেননি স্যাঞ্চেজ।

৭২ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার বদলি খেলোয়াড় মন্তিয়েল।  ৭৫ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার মুনোজ।

৮২ মিনিটে ব্যর্থ হন মেসি। ডি মারিয়ার পাস থেকে বল ধরে নেওয়া মেসির শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়।

শেষ মুহূর্তে এসে মরিয়া হয়ে ওঠেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। একের পর এক ফাউল হতে থাকে। ৮৬ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার কারদোনা। ৮৭ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন রদ্রিগেজ। ৮৮ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার বারিয়স। ৯১ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার পেজেল্লা।

১-১ সমতাতেই শেষ হয় দ্বিতীয়ার্ধের মূল সময়। ৪ মিনিট সময় সংযোজন করেন রেফারি।