Advertisement


সর্বশান্ত, রিক্ত মহেশখালীর ইদ্রিসের পাশে দাঁড়াই


মুহম্মদ হেলাল উদ্দিন

মো. ইদ্রিস, বয়স অনুমান ৩৬ বছর। মহেশখালীর মাতারবাড়ির বাসিন্দা। ছোটকাল থেকে দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা আর দারিদ্রতা, অভাব-অনটনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী একজন জীবন সংগ্রামী মানুষ। অদম্য মেধাবী ইদ্রিস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে যোগদান করেন।

জীবনের প্রাথমিক ভীত রচনা করে পরবর্তী প্রজন্মে নিজের আত্ম-পরিচয় সম্প্রসারিত করার মানসে বিয়ে করেন ২০১৪ সালে। জীবনের পরম আরাধ্য গ্রহণ করে ফুটফুটে দু'টি সন্তানের পিতা হন ইদ্রিস। বড় সন্তানের বয়স ছয় বছর আর ছোটটির মাত্র দেড় বছর।

মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান ও অপরাপর আত্মীয় স্বজনের সাথে মিলে মিশে মহাসুখেই চলছিল ইদ্রিসের কাঙ্খিত জীবনধারা।
 
২০১৫ সালে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ইদ্রিস। ডাক্তারী পরীক্ষায় নিশ্চিত হয় ইদ্রিসের শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধী 'লিভার সিরোসিস'। ইদ্রিসের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। সব কিছুতেই অন্ধকার দেখা দিলো। প্রজ্জ্বলিত জীবন শিখা হঠাৎ ধপ ধপ করতে লাগলো। যেনো জ্বলন্ত মোমবাতি নিবে যাওয়ার আগের দৃশ্যের নিষ্ঠুর ও ব্যাঙ্গ প্রদর্শণ। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে ছুটে গেছেন জীবন বাঁচানোর পরম আকাঙ্খায়। চিকিৎসা খরচ মেটাতে নিজের সবটাই শেষ করেছেন আগেই। স্ত্রী, মা-বোনদের শখ আর আহ্লাদের গয়না-পাতিও বিক্রি করে ফেলেছেন ইতোমধ্যেই। চাকুরীর বয়স মাত্র সাত বছরের সীমা পার করলেও অগ্রিম হিশেবে তুলে ফেলেছেন পেনশনের সম্ভাব্য টাকা। ঋণে জর্জরিত ইদ্রিস চোখে এখন কেবলই অন্ধকার, ঘোর অন্ধকার। অমাবস্যার রাত তার সাথে পেরে ওঠে না। মৃত্যুই যেনো তার শেষ রক্ষা। সব হারিয়ে, আপনজনদের সবকিছু ভাসিয়ে দিয়ে ইদ্রিস এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে কেবল মৃত্যুকেই কামনা করছেন আর অভিশাপ দিচ্ছেন নিজেকে। নিজেকে কখন অভিশাপ দেয় মানুষ? এ দায় কি আমরা এড়াতে পারি?

ইদ্রিস আজ নিঃস্ব, ক্লান্ত আর ঘোর অমানিশার গন্তব্যহীন এক যাত্রী হয়ে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। ইদ্রিসের জানা নেই তার চিকিৎসা ব্যয় কিভাবে চলবে, কিভাবেই বা চলবে তার স্ত্রী, শিশু সন্তান, প্রিয় মা-বোন। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে ঘুম আসে না ইদ্রিসের। কেবলই ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকেন তিনি।

টগবগে আর দূরন্ত যুবক ইদ্রিস কি ফিরে আসতে পারে না তার স্বাভাবিক জীবনে? হয়তো পারে, হয়তো না। এ সিদ্ধান্তের একছত্র অধিপতি মহান রব। তিনিঁই বিষয়টি নির্ধারণ করবেন, করুক। কিন্তু, আমরা কি জবাব দিব বিধাতার কাছে। আমাদের কি কোনই দায়িত্ব নেই? যদি মানুষ হিশেবে আমাদের কোনো দায়িত্ব থেকেই থাকে তো আমরা কেনো তা পালন করব না? আসুন আমরা মানুষের দায়িত্ব পালন করি, শুধুই একজন মানুষের। ইদ্রিস জানুক তিনি এখনো মানুষের সমাজেই বসবাস করেন। মহান রব ইদ্রিসের প্রতি নিশ্চয়ই উত্তম প্রতিক্রিয়া দেখাবেন। আপনার সহযোগিতা অবশ্যই আপনার মুক্তির পথকে সুগম করবে।
 
এটি ইদ্রিসের পারসোনাল বিকাশ নাম্বার- ০১৮২৫-০৩৭০৩১