Advertisement


কালারমার ছড়া: হামলা, মামলা, স্থায়িত্ব আর জনপ্রিয়তা


মুহম্মদ রুহুল আমিন

স্থানীয় সমস্যা বিষয় আমি আগে থেকেই সরব।আর এটা নিয়ে আমাকে বিব্রত অবস্থায়ও পড়তে হয়েছে। এখানে লেগে থাকার ফলে টোকাই টাইপের অনেকে কথার ওপর কথা বলেছে। যাদের আমি অনেক স্নেহ ও ভালোবেসেছি তারা গায়ের ওপর চড়ে বসেছে। তাই নিরাপত্তা বজায় রেখে নিরবে মেনে নিয়েছি।এর মধ্যে কিছু কিছু বিষয় যেমন ব্যক্তি, ছোট ছোট সমস্যা টঙের দোকানের কাজকারবার এসবে আমার ঝোঁক নেই। তবুও একেবারে যে লিখিনি তা না। এখানে একটা বলতে গিয়ে বা বুঝাতে গিয়ে মানুষ বুঝে নেয় আরটা। তাই সেসব ঝামেলা থেকে আমি হাজার মাইল দূরে। এরপরেও নিজের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আজকের লিখা। এটি সনির্বন্ধ কোনো লিখা নয়, সাধারণ মত মাত্র।

বিশৃঙ্খলার একটা মাত্রা আছে। সেই মাত্রা অতিক্রম করলে ত্রাসের রাজত্ব নেমে আসে। এরপর খুনখারাবি হয়। যেমনটি হচ্ছেও। কাউকে মামলা, হামলা, ভয়ভীতি, জুলুম আর অপবাদ এসবের মাধ্যমে কাউকে দমানো যায় না, বরং জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। সম্প্রতি কয়েকটা ঘটনা এর সাক্ষ্য বহন করে। ওসবের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার তো প্রশ্নই ওঠে না, এমন কি বিশৃঙ্খলা আরও বাড়তে থাকে। ফলে একটা পক্ষের পতন ঘটে। অতীতে যাদের পতন হয়েছে তাদের কর্মফল তারই প্রমাণ। তাই পেশিশক্তির ওপর নির্ভর না করে আদর্শিক লড়াইয়ে টিকে থাকতে হবে।অতীত স্মৃতি এখানে বারবার স্মর্তব্য।

কালারমারছড়ায় সম্প্রতি কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল। যা খুবই দুঃখজনক। হত্যাকারীদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু নিরপরাধ কাউকে মামলার কালিমা লেপন করে সমাজের ওপর কালিমা লেপন করতে নেই। এলাকায় পেশিশক্তি হয় তো বাড়ছে না কিন্তু সচেতনতা বাড়ছে। সহজাত অনুমেয় কেমনে কি হচ্ছে। তাই ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য আরও স্বচ্ছ হওয়ার বিকল্প নেই। দেশব্যাপী হেফাজতের তাণ্ডবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, দেশের সম্পদ নষ্ট হয়েছে। যারা হেফাজত মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের মামলায় না জড়িয়ে আবাল, ছাত্র, ও নিরামিষ ও অর্ধ নিরামিষ ধরনের অনেকে মামলার আসামি হয়েছে। এতে ফল কি আসতে পারে? আরও আছে ঘরপোড়ন মামলা। এখানেও দেখা যায় মামলার অধিকাংশ আসামি ছাত্র, ছাত্রনেতা ও সাধারণ মানুষ। এতে প্রমাণিত হচ্ছে মামলার কলকাটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। সত্য বলার মানুষ দিনদিন বিলুপ্ত হওয়ার ফলে একধরনের অরাজকতা তৈরি হচ্ছে। যা মামলার আসামি করার মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। গবেষণায় এসেছে, এধরনের মামলায় অহেতুক যারা আসামি হয় তারা সহজাত উগ্র হয়ে ওঠে। যেহেতু নিরপরাধের অনেকেই তরুণ, উগ্র হওয়ার সম্ভাবনা তাদের বেশি। যুবসমাজকে ঠিকভাবে পরিচালিত করা না গেলে উগ্রতা নিশ্চিত হারে বেড়ে যায়। তাই প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, এসব মামলার নিরপেক্ষ ও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিরপরাধ সবাইকে বাদ দেওয়া হোক এবং বাদির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। নাহয় মিথ্যা মামলার হিড়িক কমবে না।

এলাকার ছোটখাটো বিষয়, পদপদবি এসবে আমার ধ্যান নেই। তাই এসবের ওপর কলম একদম চলে না। তারপরও এলাকার একটা দায় থেকেই যায়। সেই দায় থেকেই বলছি। শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার খাতিরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্তপূর্বক বিনা অপরাধে যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের বাদ দেওয়া হোক, একইসাথে ঘরপোড়ন মামলা ও অন্যান্য মামলার একই আদলে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাধারণ মানুষ ক্ষমতা চর্চার দিকে নেই, তারা কেবল নিরাপত্তার দিকে। তাই নিরাপত্তার প্রশ্নটি আমাদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

লেখকঃ মহেশখালীর সন্তান ও শিক্ষক