Advertisement


মহেশখালীতে প্রাইমারি স্কুলে ৬১টি নতুন শহীদ মিনার, এবার একযোগে ফুল দিলো শিক্ষার্থীরা

ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর: মহেশখালীতে এক সাথে নির্মাণ হলো এতো শহীদ মিনার

ফারুক ইকবাল, কন্ট্রিবিউটর ।। ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পর প্রত্যাশার অবসান ঘটেছে ২০২২ সালে। ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর ব্যাকুলতা শেষ হয়েছে শহীদ মিনার নির্মাণের মাধ্যমে। মহেশখালীর মতো দ্বীপ এলাকায় ডিজিটাল শিশু শিক্ষায় ভূমিকা রাখতে এগিয়ে থাকলেও গোটা উপজেলায় এতদিন কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিল না স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার। পাঠ্যপুস্তক থেকে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানলেও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছে হতাশ হতে হয়েছিলো শিক্ষার্থী। ভাষা আন্দোলনের এতো বছর পর মহেশখালীতে এ অভাবের পূর্ণতা পেলো। 

এবার শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর এক প্রতিক্রিয়ায় মহেশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এক বছর আগেও আমার বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। এবার নিজ বিদ্যালয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে পেরে মনের ভিতর আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি। ঘটিভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল আলমে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়টি উপজেলা সদর হতে ৬ কিলোমিটার দূরে মফস্বল এলাকায় অবস্থিত। নতুন শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে আমার বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ১৭০০ শিক্ষার্থী খুবই আনন্দিত। পুটিবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন- চাকুরী জীবনের ২২ বৎসর পর নিজ বিদ্যালয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়েছি।

জানা গেছে- মহেশখালী উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এলাকায় অবস্থিত ৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬১ টি বিদ্যালয়ে নির্মাণ হয়েছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম স্মৃতিফলক শহীদ মিনার। 

মহেশখালী উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু নোমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পরামর্শে ২০২১ সালে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। সেই বছর ২১ ফেব্রুয়ারিতে ফুল দেওয়ার ব্যাকুলতা শেষ হয়েছে ২০২২ সালে একযোগে ৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহান ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে। আরও ৯টি বিদ্যালয়ে খুব দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শেষ হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি সকল বিদ্যালয়ের এমন পরিবেশ দেখে তিনি বেশ আনন্দিত বলে জানান।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভব রঞ্জন দাস বলেন- করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়সমূহ বন্ধ থাকলেও বিদ্যালয়ের আশপাশের শিক্ষার্থীরা নবনির্মিত শহীদ মিনারে প্রথমবারের মতো ভাষা দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে আনন্দিত। মূলতঃ নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ, মাতৃভাষার প্রতি গভীর মমত্ববোধ সৃষ্টি ও ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানানোর জন্য প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করা হচ্ছে।