নানা জল্পনাকল্পনার এ নির্বাচন অংশ নেওয়া ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের নৌকা প্রতীকে অকল্পনীয় ভরাডুবির বিষয়কে কেন্দ্র করে পুরো মহেশখালীজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চরম বিপর্যয় নিয়ে হিসেব কষছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলের বিদ্রোহীদের দাপট ও অযোগ্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দেয়াকেই পরাজয়ের বড় কারণ হিসেবে দেখছেন তৃণমূলের নেতারা। প্রার্থী নির্বাচনে ভুল, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া ও দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেকাংশে নৌকার বিপক্ষে অবস্থায় নেওয়ায় নৌকার পরাজয় হয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। এবারের নির্বাচনে ছোট মহেশখালীতে চেয়ারম্যান পদে মোট ৬জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। তারা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার এনামুল করিম, বিএনপি সর্মথিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল মোস্তফা বাশি, স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়ান সিকদার, বর্তমান চেয়ারম্যান জিহাদ বিন আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সামাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল মোস্তফা। আর মেম্বার পদে অংশগ্রহণ করেছেন মোট ৫২জন।
বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ি, মোট ১০টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে ৩৯৪১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোটর সাইকেল প্রতীকের রিয়ান সিকদার ৷ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ঘোড়া প্রতীকের সিরাজুল মোস্তফা বাঁশি পেয়েছেন ৩৩৪৯ ভোট ৷ অপরাপর চেয়ারম্যান প্রার্থী নৌকা প্রতীকের মাস্টার এনামুল করিম পেয়েছেন ১১৬৮ ভোট, আনারস প্রতীকের মোঃ আব্দু সামাদ ৩১৪৮ ভোট, চশমা প্রতীকের জিহাদ বিন আলী পেয়েছেন ১১৬৩ ভোট ও অটোরিকশা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল মোস্তাফা পেয়েছেন ৪১ ভোট।
অন্যদিকে উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এ ইউনিয়নে নব নির্বাচিত প্রার্থী রিয়ানুল ইসলাম মঈন (রিয়ান শিকদার)-সহ মোট ৩ জনকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- জিহাদ বিন আলী, আব্দুস সামাদ ও রিয়ানুল ইসলাম মঈন (রিয়ান শিকদার)। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে গত ২রা ফেব্রুয়ারি এ বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এ ইউনিয়নে ২০১৬ সালের ২২ মার্চ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রাথী জিহাদ বিন আলী ৬ হাজার ৮৮২ পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদু সামাদ পেয়েছিলেন ৩ হাজার ১৯৮ ভোট।
এদিকে নজিরবিহীন শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শেষ হলেও মানুষের মুখ থেকে আলোচনা ফুরোয়নি। শীতে চায়ে কাপে ঝড় সমানে চলছে। এ মুখ চলছে ছোট মহেশখালী ছাড়িয়ে সমগ্র মহেশখালীতে। জেলার রাজনীতি পাড়াও বৈষয়িক আলোচনা সমানে মুখর। দলের নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ ও অভিমানের সারৎসার। তবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমগ্র অর্গানই স্বস্থি ও তৃপ্তিতে ভরপুর হয়ে আছেন একটি কাঙ্খিত শান্তিময় নির্বাচন উপহার দিতে পেরে।