Advertisement


ছোট মহেশখালীর নির্বাচন ভাবনাঃ খন্দকার মোশতাক ও অন্যান্য প্রসঙ্গ

ঠিক খন্দকার মোশতাকের মত আপনারাও দলে ঘাপটি মেরে আছেন শুধুমাত্র স্বার্থসিদ্ধির জন্য।
সৈয়দুল কাদের

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করা বর্তমান সরকারের গণতান্ত্রিক ধারার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচন গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেছে। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির অন্যতম অংশ।

মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতেই আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই সংগ্রাম করছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে জাতির জনককে যারা সহযোগিতা করেছেন সমর্থন দিয়েছেন এতেও ছিল কিছু মীর জাফর। তৎমধ্যে খন্দকার মোশতাক অন্যতম। জাতি তাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিনে ও জানে। তারা জাতির জনকের সহচর থাকলেও কোনদিন আন্তরিকভাবে জাতির জনকের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন না। ঠিক একইভাবে গণতন্ত্রের মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন এতেও কিছু অনুপ্রবেশকারী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। নির্বাচন আসলেই তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এদের চরিত্র খোলাসা হয়ে ওঠে।

আমরা দেখেছি গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার জন্য বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের এসব মুখোশধারীদের নানা ভাবে প্রভাবিত করতে হয়েছে। এমনকি কেন্দ্র তাদের ডেকে নিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য বলতে হয়েছে।  আমার প্রশ্ন হল -আওয়ামী লীগ করবেন আবার নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনাদের মোটা দাগের টাকা দিতে হবে কেন? আপনাদের এত তোষামোদ করতে হবে কেন? শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতি করেন, তিনি যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তার পক্ষে কাজ না করে বিরোধীতা করবেন কেন? নৌকা প্রতীককে পরাজিত করতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করবেন কেন? আবার পরিচয় দেন আমি আওয়ামী লীগের নেতা।  আপনাদের কর্মে বোঝা যায় আপনারা অন্তর দিয়ে আওয়ামী লীগ করেন না।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করেন না। ঠিক খন্দকার মোশতাকের মত আপনারাও দলে ঘাপটি মেরে আছেন শুধুমাত্র স্বার্থসিদ্ধির জন্য। ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যা দেখলাম এবং বুঝলাম তা অভাবনীয়। নিজেরা নৌকা প্রতীক নেওয়ার জন্য তদবির করেন আবার অন্যের বিরোধিতা করবেন তা কখনো মেনে নেওয়া যায় না।

নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী স্থানীয় সরকারের কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে ছোট মহেশখালী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরোধিতা করতে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। এমনকি আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হওয়ায় প্রার্থীকে ফুল দিয়ে অনেকেই বরণ করে নিয়েছেন। যা আওয়ামী লীগের একজন নেতার পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। এমন দৃশ‍্য দেখেছি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও। এরা খন্দকার মোশতাকের অনুসারী বলে এটা সম্ভব হয়েছে। ছোট মহেশখালীতে এনামুল করিম হারেনি হেরেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী।

আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতীক নৌকা হারানোর জন্য দফায় দফায় গোপন বৈঠক ও নানা ষড়যন্ত্র করেছেন নামধারী আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে কত মীর জাফর আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে আছে। এখনো তিনটি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়নি। ওই তিনটি ইউনিয়ন দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন অনেকে। এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অনেকেই নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দিয়েছে।  লোক দেখানো কিছু কাজ করলেও গোপনে নৌকা প্রতীককে হারানোর জন্য নানা কৌশল করেছে।

আজকের এই লেখাটি কারো বিরুদ্ধে নয়। আমরা যারা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মী আছি তারা শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেন তার পক্ষে কাজ করি। আওয়ামী লীগ করলে নৌকায় ভোট দিতে হয়। খন্দকার মোশতাকের অনুসারী হলে বিরোধিতা করতে হয়। এটার রেওয়াজ।

জনপ্রিয়তা থাকলেও দল যাকেতাকে মনোনয়ন দিতে পারে না। প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করবেন, আবার স্বার্থসিদ্ধির জন্য দলের মনোনয়ন চাইবেন। এটা কোন ধরনের রাজনীতি?

সবাইকে ধন্যবাদ, আল্লাহ হাফেজ; জয় বাংলা -জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখকঃ সৈয়দুল কাদের, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক -মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ।