Advertisement


১৫ মার্চ: শাসনভার নিজ হাতে নেওয়ার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর

মুহম্মদ হেলাল উদ্দিন

আমাদের মুক্তি সংগ্রামের মধ্য মার্চের এ দিনটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা প্রকাশ করলেই মূলত আমাদের মুক্তি সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ দিনের বঞ্চনা আর অবহেলার শিকার বাংলার মানুষ প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠছিলেন।

একাত্তরের ১৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবিতে বাংলাদেশের শাসন নিজ হাতে নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য ৩৫টি বিধি জারি করেন। তিনি একই দিন মাত্র দুটি ব্যাংককে সরকারকে দেয়া কর প্রদানের নির্দেশ দেন। আলোচনার নাম দিয়ে এদিন সামরিক প্রহরায় ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া। ঢাকায় এসেই ইয়াহিয়া জাতির উদ্দেশ্যে ২৩ মার্চ ভাষণ প্রদানের ঘোষণা দেন। ইয়াহিয়া ঢাকায় আসলেও বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। সফরসূচিতেও রাখা হয় কঠোর গোপনীয়তা।

ভুট্টোর প্রস্তাবিত দুই অঞ্চলে দুই পার্টি সমাধানে পশ্চিম পাকিস্তানেই ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশিত হয় এদিন। সর্বমহলে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের দাবানল জ্বলতে থাকে দিনের শুরু থেকেই। ভুট্টোর অয়ৌক্তিক সমাধানকে অগণতান্ত্রিক উল্লেখ করেন পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করে।

আন্দোলনের সার্বজনিনতা আসতে থাকে ক্রমশ। এদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে সকল কাজে বাংলা প্রচলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্থানীয় শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবীদের এক সভায় চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের গণবিরোধী ভূমিকার নিন্দা করা হয়। বেতার কেন্দ্রে গঠিত হয় সংগ্রাম কমিটি।