Advertisement


আজ ৮ মার্চ: একাত্তরের এইদিনে


মুহম্মদ হেলাল উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পরদিন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন নতুন উদ্যমে শুরু হয়। জায়গায় জায়গায় কালো পতাকা উত্তোলন আর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের একাত্মতা ঘোষণা করে একটি বিবৃতি আসে এদিন। এদিন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক জনাব শাজাহান সিরাজ, ডাকসুর সহ-সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন এক যুক্তবিবৃতিতে বলেন, “বাংলার বর্তমান মুক্তি আন্দোলনকে ‘স্বাধীনতা আন্দোলন’ ঘোষণা করিয়া স্বাধীন বাংলার জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক জনসভায় যে প্রত্যক্ষ কর্মসূচি ঘোষণা করিয়াছেন আমরা উহার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করিয়া স্বাধীনতার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপাইয়া পড়িবার জন্য বাংলার সংগ্রামী জনতার প্রতি আহ্বান জানাইতেছি এবং বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ঘোষিত সকল নির্দেশকে যথাযথ কার্যকরী করিবার জন্য সমগ্র দেশবাসীকে বিনা দ্বিধায় বাস্তবায়িত করিবার আহ্বান জানাইতেছি এবং কোনও মহল এই কর্মসূচির অন্তরায় সৃষ্টি করিলে তাহাকে অবশ্যই প্রতিহত করিবার জন্য আবেদন জানাইতেছি।”

৭ মার্চের ভাষণের পর এদেশে অবস্থান করা বিদেশীরা বুঝতে পারে এখানে মূলত স্বাধীনতার আন্দোলনই শুরু হয়েছে। অবস্থা আর বাস্তবতা অনুধাবন করতে পেরে অস্থানীয়দের ঢাকা ত্যাগের হিড়িক শুরু হয় একাত্তরের এদিনে। অপরদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানরত বাঙালিদের দেশত্যাগের জন্য কোনও বিমান টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। সরকারি কর্মচারীরা জীবন দিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। শিল্পীদের সিদ্ধান্ত, ঢাকা বেতার ও টেলিভিশনের সকল অনুষ্ঠান বর্তমান গণআন্দোলনের অনুকূল হবে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রিলে করার শর্তে ঢাকা বেতারকর্মীরা পূণরায় কাজে যোগদান করেন এদিন। আন্দোলন চলতে থাকে।