Advertisement


কালারমার ছড়ায় তারেক বিন ওসমান শরীফকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে রেজুলেশন প্রেরণ



প্রস্তাবিত ৬জনেও ছিলো না সিবগাতুল্লাহর নাম
 
নিউজ ডেস্ক।। নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে তৃণমূল থেকে তারেক বিন ওসমান শরীফকে আওয়ামী লীগের দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে রেজুলেশন পাঠানো হয়েছে। মহেশখালীর কালারমার ছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ বরাবর এ রেজুলেশন পাঠানো হয়। দৈনিক কক্সবাজারে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। [ ঈষৎ সম্পাদিত ]

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- তফসিল ঘোষণার পর সরব কালারমার ছড়ার প্রত্যন্ত জনপদ। কে হচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ (নৌকা প্রতীক) এর প্রার্থী তা নিয়েও চলছে জল্পনা। তবে এ ইউপিতে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের প্রথম পছন্দ বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তারেক বিন ওসমান শরীফ।

ভোটারেরা বলছেন, তারেক বিন ওসমান শরীফ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পাঁচ বছরে সামগ্রিক উন্নয়নে পাল্টে গেছে কালারমার ছড়া। এককালের অনুন্নত জনপদ এখন দেশের ‘প্রথম দুর্যোগ সহনশীল মডেল ইউনিয়ন’ এর পথে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খবাহিনীর হাতে সন্ত্রাসীদের আত্মসমর্পণে সহযোগিতা করে ক্রাইমজোন তকমা মুছতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন তিনি।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মোহাম্মদ শরীফ চেয়ারম্যানের দৌহিত্র ও সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ওসমান গণির কনিষ্ঠ পুত্র তারেক বিন ওসমান শরীফ ২০১৭ সালের ২৩ মে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর কালারমার ছড়ায় অভুতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে ইউনিয়নটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে জেলাজুড়ে। তাই আসন্ন নির্বাচনে তাঁকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী করে ৯০ হাজার মানুষও ভাগ্যবদলের স্বপ্ন বুনছেন।

গত ২৫ এপ্রিল দশম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নবম ধাপে ১৫ জুন কালারমার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, বাছাই ১৯ মে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ২৭ মে। এরপর শুরু হবে প্রচারণা। এই ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গত ৬ মে কালারমার ছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছ থেকে নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণার জন্য মতামতও নেয়া হয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, “সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে তারেক বিন ওসমান শরীফকে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করে রেজুলেশন আকারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সম্পাদক বরাবরেও প্রেরণ করা হয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন জানান, “বর্ধিত সভায় উপস্থিত ৫৯ জন নেতাকর্মী চেয়ারম্যান পদে ছয়জনের নাম প্রস্তাব করেন। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম চৌধুরী, বদিউল আলম, সরওয়ার আজিম, আলা উদ্দিন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া।-
 
এ ছয় প্রার্থীর মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তারেক বিন ওসমান শরীফকে একক প্রার্থী ঘোষণা করতে প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে মতামত চাওয়া হলে তারা সকলেই একমত পোষণ করেন। এছাড়া দু’তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশীও তারেক বিন ওসমান শরীফকে সমর্থন জানান।”

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন টিপু বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর যারা নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগ প্রার্থীই জনবিচ্ছিন্ন। তারা সুযোগ সন্ধানী। আমরা কালারমার ছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী তারেক বিন ওসমান শরীফকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ।”

প্রসঙ্গত:  ইউনিয়নটিতে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইউপি নির্বাচনের জন্য চেয়ারম্যান পদে সেলিম চৌধুরীকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। এর তিন দিনের মাথায় ২২ ফেব্রুয়ারি সেলিম চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করে তারেক বিন ওসমান শরীফকে দলের মনোনয়ন প্রদান করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তারেক বিন ওসমান শরীফকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিতে সুপারিশও করেন। পরবর্তীতে দলের আদেশ অমান্য করে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সেলিম চৌধুরী। তিনি তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে আইনজীবী নিয়োগ করে হাইকোর্টে রিট করেন।

অন্যদিকে সেলিম চৌধুরীর এসব দলবিরোধী কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দও। প্রায় এক বছর পর ২০১৭ সালের ১৮ মে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের রায় প্রদান করেন। ওই রায়ের অনুলিপি নির্বাচন কমিশন বরাবরে পাঠান আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের কপি পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব মো. নুরুজ্জামান তালুকদার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এতে বলা হয়, যেহেতু প্রথমে সেলিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল সেহেতু হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী তারেক বিন ওসমান শরীফ এর অনুকুলে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ প্রদানের সুযোগ নেই। তবে তারেক বিন ওসমান শরীফ ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তক্রমে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী। যদিও আদালতের রায়ে নৌকা প্রতীক সেলিম চৌধুরী ফিরে পেয়েছে। কিন্তু তারেক বিন ওসমান শরীফকে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হল।

স্থগিত থাকার এক বছর পর ২০১৭ সালের ২৩ মে কালামার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে তারেক বিন ওসমান শরীফ ১৪ হাজার ভোট পেয়ে সেলিম চৌধুরীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।