Advertisement


কালারমার ছড়ায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে ৩ হাজার মানুষ

এস. এম. রুবেল, কালারমার ছড়া থেকে ফিরে ।। 

মহেশখালীর কালারমার ছড়ায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় ৩ হাজার মানুষ। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে মাটির তৈরি ঘর যে কোনো সময় ধসে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। 

জানা যায়, ১৯ জুন সন্ধ্যায় কালারমার ছড়া অফিসপাড়ায় পাহাড় ধসে রবিউল হোসেন প্রকাশ রবিন (৬) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়। সে ঐ এলাকার নজির হোসেন এর পুত্র। 

নিহতের মামা সাহাব উদ্দীন জানান, সন্ধ্যায় রবিনসহ তিন শিশু পাহাড়ের পাশে খেলছিল। তাদের নিষেধ করলে বাড়ি চলে যায়। সন্ধ্যার পর রবিনকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন পাহাড়ের অংশ ধসে পড়ার বিষয়টি নজরে আসে। সেখানে চাপা পড়েছে কিনা সেটা দেখতে গিয়ে মাটি সরাতেই রবিনকে মাটিচাপা অবস্থায় মৃত পাওয়া যায়। 

এদিকে ২০ জুন বিকেল ৪টায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং পরিবারের খোঁজ খবর নেন। 

সরজমিনে দেখা যায়, কালারমার ছড়া বাজারের পূর্ব পাশে পাহাড়ের উপরেই গড়ে উঠেছে অফিস পাড়া ও ফকিরাঘোনা নামক দুটি গ্রাম। গ্রামে প্রায় ৪ শতাধিক ঘর ও ৩ হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে। পাহাড়ের উপরেই ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় রয়েছে একাধিক মাটির তৈরী ঘর। এসব ঘর যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে। এমনকি কয়েকটি ঘরের দেয়ালে ফাঁটল দেখা গেছে। 

আশেক, আবদুল মাবুদ, ছৈয়দ মিয়া সহ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের অংশ ভেঙ্গে পড়ছে। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ির দেয়াল ধসে পড়ার অবস্থা হয়েছে। 

কালারমার ছড়া ইউপি চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান, বৃষ্টি শুরুর আগে থেকেই পুরো এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার গুলো সরানোর চেষ্টা করছেন। 

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়। তাই পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পেতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তৃণমূল পর্যায়ে গণসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসময় তিনি স্থানীয়দের সহযোগীতা চান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। যেখানেই পাহাড় কাটা চলছে প্রশাসনকে জানালে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেন।