Advertisement


মাতারবাড়িতে শিশু মাহিয়াকে ধর্ষণের পর খুন করা সিরিজ কিলার লোকমানের ভয়ঙ্কর জীবন


ফারুক ইকবাল।।
মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়নের স্কুল ছাত্রী মাহিয়া (৭)কে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ সমুদ্রের পাড়ের পলিতে পুঁতে রাখে টেকনাফের বাসিন্দা মোহাম্মদ সোলেমান। লাশটি গুম করে পুঁতে রাখে পেকুয়ার উজানটিয়া বেড়িবাঁধের কাছেই। গ্রেফতারের পর পুলিশ এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে এই সিরিজ কিলার। এর আগে টেকনাফে তার প্রেমিকাকে খুন করে মহেশখালী চলে আসে এ যুবক।

সূত্র জানায়- শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকাল আনুমানিক ২টার সময় পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া নদীর পাশঘেষে করিয়ার দিঘীর প্রজেক্ট থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর হায়দার জানিয়েছেন, করিয়ার দিঘী জাহিদ চৌধুরীর চিংড়ি  ঘেরে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনব চৌধুরীর নেতৃত্বে মহেশখালী থানা পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ সোলেইমান (২৭) নামের এক যুবককে আটক করে।
 
নিহত শিশু মাহিয়া (৭) মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সাইরার ডেইল গ্রামের আয়াত উল্লাহর কন্যা এবং দক্ষিণ সাইরার ডেইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় স্কুল থেকে ফিরে নিখোঁজ হয় মাহিয়া। পরে তাকে খুঁজে না পেয়ে মাহিয়ার পিতা মহেশখালী থানায় জিডি দায়ের করে। জিডির সূত্র ধরেই কাজ শুরু করে মহেশখালী থানা পুলিশ।

নিহতের পিতা আয়াত উল্লাহ জানান, মেয়ে নিখোঁজের পর ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ফোন করে ৫লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। তখন বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। পরে সকালে পার্শ্ববর্তী এলাকা পেকুয়ায় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের মরদেহটি সনাক্ত করেন পরিবার।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রনব চৌধুরী জানান, মুক্তিপন দাবী করা ওই নাম্বারের সুত্র ধরে প্রযুক্তির সাহায্যে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত মোহাম্মদ সোলেমান নামের এক যুবককে আটক করা হয়। আটক মোহাম্মদ সোলেমান(২৭), পিতা- মৃত ছৈয়দ করিম, গ্রাম-চাকমারকূল, হোয়াক্যাং, টেকনাফের বাসিন্দা।

সে বিগত ২ বছর আগে মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে বিয়ে করে এবং ৪ মাস আগে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরীর সুবাধে মাহিয়াদের ঘরে বাসা ভাড়া নেয়। মাহিয়াকে নাস্তার লোভ দেখিয়ে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে, ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে লাগেজে ভরে লাশ গুম করে।
 

পুলিশের কাছে খুনি সোলেমান স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে সব স্বীকার করে। এর আগে তার এলাকার মৃত নুর আহমদ হাজীর কাজের মেয়ে আসমা আক্তার(১৭) নামে এক রোহিঙ্গা কাজের মেয়েকেও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে খুন করে বলে স্বীকারোক্তি দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোয়াক্যাং ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল মেম্বার মোহাম্মদ সোলেইমানের পরিচয় নিশ্চিত করেন এবং মৃত নুর আহমদ হাজীর কাজের মেয়েকে খুনের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।