Advertisement


মহেশখালীতে ভূমিদস্যু শাহাব উদ্দিন গং এর বিরুদ্ধে সরকারি বন উজাড় করে জমি দখলের অভিযোগ


রকিয়ত উল্লাহ।। কক্সবাজারের মহেশখালীর হোয়ানকে প্যারাবন নিধন করে কয়েক মাস ধরে প্যারাবনের হাজার হাজার বাইন গাছ কেটে চিংড়ী ঘের নির্মাণ করে আসছে একটি চক্র। খবর পেয়ে গতকাল ২১জানুয়ারি (শনিবার) সকালে হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়ার পশ্চিমে অমাবশ্যাখালী মৌজায় ও হেতালিয়াঘোনার সাথে লাগোয়া সরকারি প্যারাবনে উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক সাদেকুর রহমান, মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমানসহ মহেশখালী থানার ওসি প্রনব চৌধুরীর নেতৃত্বে দুইটি টিম পরিদর্শনে যায়৷ তবে অপর পক্ষ বলছে এসব তাদের বৈধ জমি, বৈধ জমিতেই তারা ঘেরের বাঁধ দিচ্ছেন।

জানা গেছে- ঘটনাস্থলে সদ্য প্যারাবনের হাজার হাজার বাইন গাছ কেটে  চিংড়ী ঘেরের দৃশ্য দেখতে পায় পাশাপাশি একটি স্কেভেটার দিয়ে বাঁধ কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে। এদিকে পুলিশ আর বন বিভাগের উপস্থিত দেখতে পেয়ে ভূমিদস্যুরা পালিয়ে যায়।


ওই ঘেরে কাজ করা স্থানীয় লবণ চাষি জয়নাল, মাজেদ, দিলসাদ, আব্দুল্লাহ, সাগরসহ আরও কয়েকজন জানান- এই চিংড়ী ঘেরটি এড৷ সিরাজুল মোস্তফা ও আনোয়ার পাশা চৌধুরীর। এই চিংড়ি ঘেরটি মোহরাকাটার মুহিবুল্লাহর পুত্র শাহাব উদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে শত শত শ্রমিক দিয়ে হাজার হাজার প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে স্কেভেটার দিয়ে মাটি কেটে চিংড়ী  ঘের ও লবণ মাট টি নির্মাণ করেছে। আমরা লবণ মাঠ গুলো সমান ভাগ করে বর্গা নিয়েছি।

সূত্রে জানা যায়- বিগত ২-৩ মাস আগেও হোয়ানকে পানিরছড়ার পশ্চিমে বেক্সিমকো ঘোনার পাশে পানি চলাচলের একটি খাল ছিল এবং এর দুই পাশেই ছিল বন বিভাগের সৃজিত হাজার হাজার বাইন গাছ ও প্যারাবন। ভূমিদস্যুদের নজর পড়ে ঐ এলাকায়। এলাকার দুই নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে হোয়ানকে মোহারাকাটার শাহাব উদ্দিন, বড় মহেশখালী মারুফসহ সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার বাইন গাছ কেটে পানি চলাচলের খালের দুই পাশে বাঁধ দিয়ে খালসহ দখল করে লবণের মাট ও চিংড়ি ঘের নির্মাণ করেন। গত বছরের ডিসেম্বর বন বিভাগ উক্ত জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাঁধ কেটে একটি বন আইনে মামলা দিয়ে দায়ের করলেও ভূমিদস্যুরা আবারও প্যারাবনের হাজার হাজার বাইন গাছ কেটে প্রায় ১০০ একর জায়গা দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরীর জানান- এসব তাদের বৈধ জমি, এলাকার অনেকের জমি আছে তাতে। বাঁধের বাইরেও তাদের অনেক বৈধ জমি আছে। কাগপত্রমূলে তাদের বৈধ জমিতেই কাজ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান- কিছু শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে ভূমিদস্যুরা প্যারাবন কেটে অবৈধ ভাবে দখল নিচ্ছে সরকারি জায়গা। গত ডিসেম্বর এই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাঁধ কেটে দিয়ে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছিল। তারপর আবারও তারা ৫ একর সরকারি প্যারাবনের বাইন কেটে প্রায় ৩৫ একর জায়গা দখল করেছে। যদিও এখানে এসে কয়েকজন শ্রমিক সিরাজুল মোস্তফা ও আনোয়ার পাশা চৌধুরীর নাম বলতেছে। আসলে কি তাঁরাও জড়িত নাকি তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে সুবিধা নেওয়ার জন্য তাদেরকে ব্যবহার করতেছে তা তদন্ত করা হবে। আবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।   

মহেশখালী থানার ওসি প্রনব চৌধুরী বলেন, সরকারি প্যারাবন নিধন করে অবৈধ ভাবে সরকারি জমি দখল করে নিচ্ছে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। বন বিভাগকে সহযোগিতা করে সমন্বয় করে সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে কাজ করছি এবং প্যারাবন নিধনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।