বনবিভাগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- হোয়ানকে কালাগাজি পাড়ায় বগাচতর ঘোনার সাথে লাগোয়া কোহেলিয়া নদীর পাশে সরকারি বন বিভাগের প্রায় ৮ হাজার বাইন গাছ কেটে সাবাড় করেছে এবং ১০০ হেক্টর জায়গা দখলের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বন আইনে ২টি ও মহেশখালী থানায় আরও ১টি মামলা করেছে বন বিভাগ। এসব মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কুতুবদিয়ার বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামে পুত্র এরশাদকে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন যথাক্রমে হোয়ানক কালাগাজি পাড়ার ফয়জুল করিমের পুত্র নাজিম উদ্দিন নাজু, একই এলাকার মৃত আব্দুল খালেক এর পুত্র আব্দুল মতিন ও হাদেম আলীর পুত্র শাহাদাত কবিরসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জন।
সূত্রে জানা যায়- কুতুবদিয়ার বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের পুত্র এরশাদের নির্দেশে হোয়ানক কালাগাজি পাড়ার ফয়জুর রহমানের পুত্র নাজেম উদ্দিন নাজুর নেতৃত্বে এই বন নিধন যজ্ঞ চলছে। বন বিভাগের একটি পক্ষকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের পাহারা বসিয়ে ও স্থানীয় আনসার কমান্ডারের সহযোগিতায় এটি হচ্ছে। ৩টি স্কেভেটার ও শত শত শ্রমিক দিয়ে রাতে ও দিনে বগাচতর ঘোনার সাথে লাগোয়া ও জামিরাখালে সৃজিত ১৯৯৫-২০০০ সনের রোপণকৃত একটি বাগানের প্রায় ১০ হাজার বাইন কেটে ৩০০ একর জায়গা দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করেন। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়ে চড়ে বসে বন বিভাগ। প্রথম দফায় ১০জানুয়ারি অভিযান করে বন বিভাগ। এই অভিযানকে তোয়াক্কা না করে আবারও চিংড়ি ঘের নির্মাণে নেমে পড়ে ভূমিদস্যুরা। খবর পেয়ে ১২জানুয়ারি আবারও অভিযান করে বন বিভাগ।
তবে বন বিভাগের এ সব অভিযানকে নাটকীয় মনে করেন সচেতন মহল ও স্থানীয়রা। পরে ১৪ জানুয়ারি গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের নেতৃত্ব বন বিভাগের শাপলাপুর বিট, কালারমার ছড়া বিট, মাতারবাড়ি বিট ও ঝাপুয়া বিট এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তৃতীয় দফায় অভিযান করে চিংড়ি ঘেরের কয়েকটি স্থানে বাঁধ কেটে দেন এবং চিংড়ী ঘেরে ব্যবহৃত একটি স্কেভেটারের কিছু অংশ গুড়িয়ে দেন।
স্থানীয়রা জানান- বন বিভাগের অভিযানকে স্বাগত জানাচ্ছি তবে চিংড়িঘেরে বাঁধ সম্পূর্ণ বিলীন করে দিয়ে ওই জায়গায় আবারও বাইন গাছ রোপণ করা জরুরি, অন্যতায় তারা আবারও উক্ত জায়গা দখল কর চিংড়ী ঘের নির্মাণ করবে।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে- বন ও ভূমিদস্যুরা আবারও জড়ো হয়ে আজ রাতে বাঁধ নির্মাণ ও ক্যামিকেল দিয়ে প্যারাবন পুড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। আগেও কেরোসিন ছিটিয়ে এখানে বন পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বন বিভাগের গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান- হোয়ানকের কালাগাজি পাড়ায় ভূমিদস্যুরা সরকারি প্যারাবন কেটে চিংড়ী ঘের নির্মাণ করেছে। এতে পৃথক ভাবে ৩বার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং ভূমিদূস্যদের বিরুদ্ধে বন আইনে ২ টি ও থানায় ১ টি মামলা করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে বন বিভাগ এখানে অবৈধ ঘের করতে দিবে না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী জানান- হোয়ানকে সরকারি প্যারাবন নিধনকারী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেছে বন বিভাগ। মামলাটি নিয়মিত হিসাবে রুজু করা হয়েছে। মামলার আসামিদের ধরতে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।