Advertisement


সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রি যাপন বন্ধের যৌক্তিকতা



প্রনব চৌধুরী

সম্প্রতি সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রি যাপন বন্ধকে কেন্দ্র করে অনেকের মধ্যেই পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে গেছে। প্রথমত বলে রাখি ব্যক্তিগতভাবে আমিও চাই সোনাদিয়া দ্বীপের সৌন্দর্যে আচ্ছন্ন হয়ে পর্যটকরা আসুক, সৌন্দর্য উপভোগ করুক এবং পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটুক। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবে পর্যটন শিল্পের আরো একটি খাত তৈরি হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের কথায় ধরুন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের সৌন্দর্যে আচ্ছন্ন হয়ে পর্যটকরা সেখানে ঘুরতে যায়। আপনার নিশ্চয়ই দেখেছেন সেন্ট মার্টিনের এক অংশ ধুধু বালি ছাড়া আর কিছুই নেই।

তদ্রুপ আরো কয়েকটি পর্যটনস্থল সম্পর্কে এ ধরনের কথা বলা যায়। আমাদের একটি অভ্যাস আছে। কোন কিছু সুন্দর ভাবে সৃষ্টি হওয়ার আগে তার ফলাফলটা আগে পাওয়ার চেষ্টা করি। পরিবেশ রক্ষা করা ভাই আমার কাজ নয়। তবে এই কাজে সহযোগিতা করা আমার কর্তব্য। যারা ইতিমধ্যে সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ করেছেন তারা যদি পর্যটকের দৃষ্টিতে ভালো করে দেখতেন যে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য ব্যবসায়ীরা কি হারে গাছ কর্তন করে ফেলেছে। আপনারা ক্ষণিকের জন্য সোনা দিয়া দ্বীপ ভ্রমণ করছেন। কিন্তু স্থায়ীভাবে এর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পর্যটকদের জন্য আবাসস্থল করতে গেলে অনেক দপ্তর থেকে অনুমতির প্রয়োজন হয়। ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। এর কোনটাই সোনাদিয়া দ্বীপে নেই। সরকার কর্তৃক আরোপিত সকল নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করুক এতে সমস্যার কিছুই নেই। কিন্তু একটি নীতিমালা তো অনুসরণ করতে হবে। যার যেভাবে ইচ্ছে সেখানে সে তাই করে সৌন্দর্য তো নষ্ট করছেই বরঞ্চ অনেক পর্যটক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন আমার জানা মতে। আপনারা সকলেই জানেন এটি একটি ইসিএ অন্তর্ভুক্ত জায়গা। আগে সরকার কর্তৃক পর্যটন স্থল হিসেবে ঘোষিত হোক এবং আবাসন ব্যবস্থার জন্য সকল নীতিমালা অনুসরণ করে সবকিছু গড়ে উঠুক এরপর পর্যটকরা সোনাদিয়া দ্বীপের রাত্রিবেলা সৌন্দর্য উপভোগ করুন। দয়া করে কোন কিছু সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই সৃষ্টিকে ধ্বংস করবেন না। সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রেবেলা থাকার ব্যাপারটি অনেক আগে থেকেই প্রশাসনিক ভাবে নিষিদ্ধ করা আছে। এই দ্বীপ আপনার আমার এবং সবার। আমাদের সবার উচিত এই দ্বীপের সৌন্দর্যকে রক্ষা করা এবং পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখা।

শুধুমাত্র তর্কের খাতিরে তর্ক করে নিজেকে আলোচনায় জড়াবেন না। আগে আইনগত ব্যাপারটি দেখুন তারপর সমালোচনা করুন। আপনার গঠনমূলক সমালোচনা এই সমাজকে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

লেখক: প্রনব চৌধুরী
অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মহেশখালী থানা, কক্সবাজার।