ক্ষতির আশঙ্কা থেকে থানায় করা হয়েছিলো একাধিক জিডি
বিশেষ প্রতিবেদক।। মহেশখালীতে শত্রুতামূলক ভাবে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুজাফর ছিদ্দিকীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রবিবার বড় মহেশখালীর জাগিরাঘোনা এলাকায় এই বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে বাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর একটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
মুক্তিযোদ্ধা আবুজাফর ছিদ্দিকির সন্তান সরওয়ার কায়সার সোহেল জানান- গত ২০২০ সালের ২৪ জুন এই বাড়িতেই তার ছোট ভাই মনোয়ার কায়সার ছিদ্দিককে নির্মম ভাবে পিটিয়ে খুন করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় সে সময় খুনের মামলা হওয়ার পর প্রধান আসামি মো. সিরাজ বিদেশে পালিয়ে গিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। মামলার ১৬ আসামির মধ্যে মাত্র ১জন গ্রেফতার হয়ে জেল হাজাতে রয়েছে -বাকি ১৪ আসামি জামিনে মুক্ত আছে। কক্সবাজার জজ আদালতে বিচারাধীন এ হত্যা মামলাটির ধার্য্য তারিখ ছিলো আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরইমধ্যে তাদের বাড়িটি নির্মাম ভাবে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
মুক্তিযোদ্ধার এই সন্তান আরও জানান- তাদের পৈত্রিক বাড়ি কালারমার ছড়ার সোনারপাড়া এলাকায়, পড়ালেখা ও চাকরির সুবাদের তারা পৌর সদরের কাছাকাছি জাগিরাঘোনায় এই বাড়িটি করেছিলেন, এখানে আশপাশে কোনো আত্মীয়-স্বজন না থাকায় প্রতিবেশীরা প্রথম থেকেই তাদের সাথে শত্রুতামূলক আচরণ করতে থাকে। ভাই খুন হওয়ার পর তা নিয়ে থানায় মামলা হলে আসামিদের হুমকির মুখে তারা বাড়িছাড়া হয়ে পড়ে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে বাড়টি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি মনে করেন- তার ভাই এর হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে এসে ওই এলাকা থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। আগুনে বাড়িটি ও বাড়ির আসবারপত্র সম্পূর্ণ পুড়ে যায়, খাসে পড়ে বাড়িটির মাটির দেয়ালও। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মহেশখালী স্টেশনের দমকল কর্মীরা এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
খুনের মামলার বাদি সরওয়ার কায়সার সোহেল দাবি করেন- তার ভাইকে নির্মমা ভাবে খুন করার পর এনিয়ে থানায় মামলা হলেও বরাবরই পুলিশের ভূমিকা ছিলো রহস্যজনক, তারা শত চেষ্টা চালিয়েও খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশের সহযোগিতা পায়নি। এ অবস্থায় ধারাবাহিক ভাবে খুনিদের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এ নিয়ে থানায় পর পর ৪টি সাধারণ ডায়েরি করেও পুলিশের সহায়তা পায়নি তারা, বাধ্য হয়ে বাড়িছাড়া হতে হয়েছে তাদের। বর্তমানে তাদের পুরা পরিবারটিই বেশ নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে বলে দাবি করেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মহেশখালী স্টেশনের স্টেশন মাস্টার পুলক সরকার জানান- আগুনের খবর পাওয়ার তাদের ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। তাবে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই বাড়িটি অনেকটা পুড়ে যায়। তার প্রাথমিক ধারণা থেকে আগুনের কারণ ও ক্ষয়তির একটি নুন্যতম পরিমাণ লিপিবদ্ধ করেছেন। বাকিটা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসির চলতি দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক মীর জানান- সন্ধ্যা একটি বাড়িতে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন বলে খবর পেয়েছি, এটি শত্রুতামূলক আগুন বলে কেউ এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।