Advertisement


হোয়ানকে নিরীহ চাষির লবণ মাঠের পলিথিন ও বাঁধ কেটে দিয়ে লাখ লাখ টাকার লবণ নষ্ট করেছে সন্ত্রাসীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক, লবণমাঠ থেকে ফিরে ।। মহেশখালীর হোয়ানকের বড় ঘোনা এলাকায় বিনা কারণে শত্রুতামূলক ভাবে এক নিরীহ লবণচাষির লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দিয়ে ও উৎপাদিত বিপুল টাকার লবণ নষ্ট করে এবং মাঠের বাঁধ কেটে দিয়ে লঙ্কাকাণ্ড চালিয়েছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্র। সন্ত্রাসীদের এমন নির্মম শত্রুতায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে দরিদ্র ওই লবণচাষি পরিবার।


জানা গেছে- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পশ্চিম কালাগাজি পাড়া এলাকার জনৈক মৌলানা সফর আলীর সাথে একই এলাকার মৃত আজিজুল হক এর পুত্র মোহাম্মদ নোমান গং  এর মধ্যে অন্য স্থানের উলাখালী ঘোনা নামক লবণ প্রকল্পে ভূমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই উলাখালী ঘোনা এলাকায় সফর আলীর মালিকানাধীন সাড়ে ৪ একর লবণ জমি জোরপূর্বক অবৈধ দখলে যাওয়ার চেষ্টা করে মোহাম্মদ নোমান গং। এতে বাঁধা দিলে দখলবাজরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২১ ডিসেম্বর দুপুরে সফর আলীর বাড়ির সামনে গিয়ে সফর আলীর সন্তান ওবায়দুল্লাহকে ব্যাপক মারধর করে তার কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার উদ্যোগ নিলে নোমান গং উলাখালী ঘোনায় তাদের জমিতে লবণ মাঠের পলিথিন কেটে দিয়েছে বলে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা করার চেষ্টা চালায়। থানা প্রশাসনের সত্যনিষ্ট ভূমিকায় তারা এ মিথ্যা মামলা করতে ব্যর্থ হলে অবশেষে মৌলানা সফর আলী কর্তৃক বড় ঘোনা নামের অন্য একটি প্রজেক্টে স্থানীয় নিরীহ লবণচাষি আব্দুস শুক্কুর এর কাছে অগ্রীম লাগিয়ত করা জমিতে গিয়ে প্রায় ৩ একর জমির পলিথিন তচনচ করে ও কেটে দেয়। একই সময় তারা উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ লবণ তচনচ করে পানির সাথে মিশিয়ে দেয় এবং লবণ মাঠের বাঁধ কেটে দিয়ে পানি ঢুকিয়ে দেয়। এতে নিমিশেই ওই দরিদ্র লবণচাষির লাখ লাখ টাকার পুঁজি পানিতে ভেসে যায়। এ অবস্থা ওই চাষির পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

জানা গেছে -সম্প্রতি স্থানীয় চাষিদের স্বার্থরক্ষায় সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে লবণের বাজারমূল্য বিপুল অংকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা এলাকার দখলবাজ সন্ত্রাসী চক্রগুলো যূথবদ্ধ হয়ে নিরীহ ভূমি মালিকদের টার্গেট করে তাদের জমিতে গিয়ে অবৈধ দখলদারাত্ব স্থাপন করে মূল মালিকের চাষিদের তাড়িয়ে দিয়ে কোনো প্রকার লাগিয়ত্ না দিয়েই নিজেরা চাষ ও লবণ বিক্রি শুরু করেছে। মূলতঃ লবণ ভূমিগুলো সমুদ্র তীরে ও দুর্গম এলাকায় হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও তেমন কিছু করার থাকে না।

এদিকে জমি মালিকের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক এমন কাণ্ড ঘটনানোর ফলে বাঁধ কেটে দেওয়ায় আশপাশের লবণজমিও পানিতে প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আশপাশের চাষিরাও ক্ষুব্দ।

মূলতঃ লবণের মূল্য বাড়ার পটভূমিতে বর্তমানে মহেশখালীর বিভিন্ন স্থানে এ ভাবে লবণ জামি দখলবেদখলের হিড়িক পড়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী। তিনি বলেন- কেউ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর ভাবে দমন করা হবে।