বিশেষ সংবাদদাতা।। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিনেট সদস্য মনোনীত হয়েছেন মহেশখালীর কৃতিসন্তান ও কক্সবাজার-০২ আসনের সংসদ-সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক। ৫ সদস্যের এ সিনেটে ২ নম্বর ক্রমিকে মনোনীত হলেন তিনি। মহেশখালীর সন্তান হিসেবে তিনিই প্রথম সিনেট সদস্য হলেন।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসবে এমন প্রাপ্তিতে খুশি আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। কক্সবাজারসহ বৃহত্তর দক্ষিণ চট্টগ্রামে আরও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জোর চেষ্টা চলছে বলে তিনি তথ্য দেন।
জানা গেছে- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সিনেট সদস্য হিসেবে ৫ জন সংসদ সদস্যকে মনোনয়ন দিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গত ৫ জুন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুল জামিল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
মনোনীত নতুন ৫ সিনেট সদস্য হলেন—চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, কক্সবাজার-২ আসনের আশেক উল্লাহ রফিক, চট্টগ্রাম-২ আসনের খাদিজাতুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম-৪ আসনের এস এম আল মামুন এবং চট্টগ্রাম-১ আসনের সাংসদ মাহাবুব উর রহমান।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সিনেটে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। উপ-উপাচার্য, সরকার মনোনীত পাঁচজন সরকারি কর্মকর্তা, স্পিকার মনোনীত ৫ জন সংসদ সদস্য, চ্যান্সেলর মনোনীত পাঁচজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন, পদাধিকারবলে একজন সদস্য, রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েটবৃন্দ মনোনীত ২৫ জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্বাচিত ৩৩ জন, সচিব এবং পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধির সমন্বয়ে সিনেট বডি গঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ- ১৯৭৩ অনুযায়ী সিনেটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট অনুসমর্থনসহ সব ধরনের আইন ও বিধিমালা অনুমোদনকারী সর্বোচ্চ পর্ষদ হচ্ছে সিনেট।
মহেশখালী-কুতুবদিয়া নিয়ে গঠিত সংসদিয় আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক এই সিনেটের সদস্য মনোনীত হওয়ার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ও অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের একজন অভিভাবক পেলেন।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি বলেন- 'জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার তাকে সিনেট সদস্য মনোনীত করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তিনি গর্বিত ও আনন্দিত। আগামীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে তার চিন্তা ও মেধার প্রতিফলন ঘটাতে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলে জানান। একই সাথে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিগুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন- এ অঞ্চলে সরকারি উদ্যোগে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা সময়ের দাবি, চট্টগ্রামে গড়ে ওঠা মহানগর কেন্দ্রিক সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই এ অঞ্চল থেকে দূরে- তাই এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠা খুবই জরুরি। এ নিয়ে সরকারের উপরমহলে ইতোমধ্যেই তিনি দাবি রেখেছেন বলে জানান। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আওতায় এনে এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে সম্ভাবনার সবুজ অর্থনীতি, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাওয়ার প্ল্যান্টসহ দেশে জ্বালানী শক্তির হাব হিসেবে গড়ে ওঠা মহেশখালী ও বিশাল সমুদ্রশক্তি নিয়েও গবেষণার সুযোগ হবে, গড়ে উঠবে যোগ্য জনশক্তি। নিকট ভবিষ্যতে এখানে একটি পরিপূর্ণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখেন জাতীয় সংসদের এই আইনপ্রণেতা।
জানা গেছে- মহেশখালীর কেউই এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে ছিলেন না। সিনেট- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম। বিশেষত আর্থিক অনুমোদন আর নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সিনেট সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। আর এমন মর্যাদাপূর্ণ পদে আসীন হলেন হলেন মহেশখালীর সন্তান আশেক উল্লাহ রফিক। মহেশখালীর সন্তানের এমন প্রাপ্তিতে মুগ্ধ অভিভাবক ও শিক্ষা সচেতন সমাজ।
মাহবুব রোকন //