Advertisement


মহেশখালীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু ফরিদুল আলম গ্রেপ্তার


নিজস্ব প্রতিবেদক।।
মহেশখালী উপজেলার কুখ্যাত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকা আলোচিত ফরিদুল আলম ওরফে দালাল ফরিদ কে মহেশখালী থানা পুলিশ আটক করেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ (এলও) অফিসের দালাল হিসেবে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে অন্তত ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

আনসার ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে ৫৮ একর লবণ মাঠ দখল- স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের একাংশের প্রভাবশালী নেতাদের রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফরিদুল আলম মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা মৌজার বুধার ঘোনা এলাকায় প্রায় ৫৮ একর লবণ মাঠ দখল করে নেন।

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল চেয়ারম্যানের রেফারেন্সে তিনি এলাকায় অনিয়মিতভাবে একটি আনসার ক্যাম্প স্থাপন করান, এবং সেই ক্যাম্পের উপস্থিতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে লবণ মাঠটি জোরপূর্বক দখলে রাখেন।

পরে জমির মালিকরা হাইকোর্টে রিট করলে আদালত আনসার ক্যাম্প প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। আনসার ক্যাম্প চলে যাওয়ার পর ফরিদ তার নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে পুনরায় জোরদখল কায়েম করেন বলে স্থানীয়রা জানান।

সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ংকর তৎপরতা- অভিযোগ রয়েছে, তার সশস্ত্র বাহিনী স্থানীয় লোকজনকে প্রায়ই গুলি, হামলা ও ভয়ভীতির মুখোমুখি করেছে। ক্রমাগত ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের আশঙ্কায় ভুক্তভোগীরা দীর্ঘদিন মামলা করতে সাহস পায়নি।

চিংড়ি ঘের কেলেঙ্কারি ও জিআর মামলা- গত বর্ষায় আইল্যা ঘোনা এলাকায় একটি চিংড়ি ঘেরে তার দলবলসহ হালমা করতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনায় ১ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় থানা পুলিশ জিআর ১৩/২৫ নম্বর মামলাটি রুজু করে।

এ ছাড়া অতীতেও চাঁদাবাজি, জমি দখল এবং অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও নির্বাচনী প্রভাব বিস্তার- ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ফরিদুল আলম ইউনিয়নে একক আধিপত্য বিস্তার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ খরচ চলত ফরিদের চাঁদাবাজি ও দখলকৃত জমির আয় থেকে।

এলও অফিসের দালালি ও প্রতারণার অভিযোগ- দীর্ঘদিন ধরে এলও অফিসের দালাল হিসেবে কাজ করা ফরিদ ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার সুযোগ নিয়ে নিরক্ষর ও সাধারণ মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে— অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের নামে প্রতারণা, ভুয়া মামলা দিয়ে টাকা আটকে রাখার চেষ্টা, কমিশন ভিত্তিক দালালি, শতাধিক মানুষের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, একাধিক চেক প্রতারণার মামলা।

প্রায় ২০ বছর ধরে তার এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত ছিল বলে অভিযোগভিত্তিক তথ্য পাওয়া গেছে।