Advertisement


নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন দুই মন্ত্রী

জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর যুদ্ধাপরাধ মামলার আপিলের রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগকে নিয়ে 'অবমাননাকর' মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আপিল বিভাগে ব্যাখ্যা দাখিল করেছেন সরকারের দুই মন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সময় আবেদন করেছেন। আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মঙ্গলবার সকালে সশরীরে আদালতে হাজির হবেন। সোমবার তাদের আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে বিচার প্রশাসনে হস্তক্ষেপ, বিচার বিভাগের মর্যাদা ও কর্তৃত্ব খর্ব এবং সুপ্রিমকোর্টের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও চরম অবমাননাকর বক্তব্য দেয়ায় গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগ তাদেরকে ১৪ মার্চের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করতে এবং ১৫ মার্চ সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী দুই মন্ত্রীর পক্ষে তাদের আইনজীবীরা আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন। পরে কামরুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, 'সর্বোচ্চ আদালত, প্রধান বিচারপতি ও সব বিচারকের প্রতি তার (কামরুল) শ্রদ্ধা রয়েছে। ওই বক্তব্যের জন্য তিনি আদালতের মার্সি (ক্ষমা) চেয়েছেন।' তবে আদালতের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী ১৫ মার্চ কামরুল হাজির হতে পারছেন না জানিয়ে এই আইনজীবী বলেছেন, 'আবেদনে সময় চাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। একটি সম্মেলনের কারণে বিদেশে থাকায় আমার মক্কেল ১৫ তারিখে উপস্থিত থাকতে পারছেন না। ১৬ তারিখের পর সময় দিলে তিনি অবশ্যই আদালতে হাজির হবেন।' এদিকে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবীর মাধ্যমে লিখিতভবে আবেদন জমা দেন মোজাম্মেল হক। এই বিষয়ে তার আইনজীবী আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দিয়েছি। আবেদনে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। আদালত ও বিচারপতিদের প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী শ্রদ্ধাশীল। মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রী শুনানিতে অংশ নেবেন।' এদিকে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের দৈনন্দিন কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতির বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করবেন। উল্লেখ্য, গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানিকালে মামলাটির তদন্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে দুর্বলতার কারণে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার প্রতি গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। পাশপাশি রায়ের জন্য ৮ মার্চ দিন দার্য করেন। বিষয়টি নিয়ে আপিলের রায় ঘোষণার তিন দিন আগে সরকারের দুই মন্ত্রী বিরূপ মন্তব্য করেন। রাজধানীর বিলিয়া সেন্টারে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে পুনরায় মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানির আহ্বান জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তখন খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'প্রধান বিচারপতি যে মন্তব্য করেছেন, তাতে আসামির মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কোনো কারণই নেই। আমি নিশ্চিত যে, তার কথা থেকে তিনি বাইরে যেতে পারবেন না। আসামিকে হয় তিনি খালাস দেবেন, নয় সাজা কমিয়ে দেবেন, না হয় মামলা পুনর্বিচারে পাঠাবেন।' 'আর এরপরও যদি রায় অন্যরকম (মৃত্যুদণ্ড) হয়, তাহলে আবার অনেকে বলবে, সরকার চাপ দিয়ে রায় বহাল রেখেছে' ওই সময় বলেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে এই মামলা পরিচালনা থেকে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকেও বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সমালোচনায় লিপ্ত হন। তিনি বলেছিলেন, 'প্রধান বিচারপতি যদি ওপেন কোর্টে কোনো মন্তব্য করে থাকেন, তাহলে সেটা উনারই একজন বিচারপতি হিসেবে, একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে বোঝা উচিত। এবং এমনটা করে থাকলে আমি আহ্বান করবো- উনি সেটা প্রত্যাহার করে নেবেন অথবা উনি এটা মনে করলে একজন প্রধান বিচারপতির পদে আসীন থাকার সুযোগ কতটা আছে, সেই বিচার তিনিই করবেন।' - See more at: http://www.jugantor.com/online/national/2016/03/14/6937/%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%83%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%87-%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80#sthash.eZwF85SF.dpuf