বিশেষ প্রতিনিধি
মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী মাহারা পাড়া এলাকার এক দল ইয়াবা ব্যবসায়ী সক্রিয় রয়েছে। তাদের কারণে সমাজে নানা প্রকার ক্ষতি ও বিশৃঙ্খলা হয়ে আসছে। এই মুহূর্তে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এনে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার দাবী উঠেছে। পশ্চিম মাহারা পাড়া এলাকার ৪ মাদক বিক্রেতার নাম উল্লেখ করে মহেশখালী থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকার গ্রাম পুলিশ সদস্য ও চৌকিদার আবু ছৈয়দ। একই ভাবে সমাজে তাদের অত্যচার থেতে বাঁচতে সমাজের শান্তিপ্রিয় লোকজনের পক্ষে থানায় জিডি করেছেন এসএম আনচারুল করিম রাজু নামের এক ব্যক্তি।
আবু ছৈয়দের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে -পশ্চিম মাহারা পাড়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ মিয়ার পুত্র জাফর আলম, জাফর আলমের স্ত্রী পাখি আকতার, এজাহার মিয়ার পুত্র খাইরুল আমিন ও মগরিয়া কাটা এলাকার মৃত মোহাম্মদ মিয়ার পুত্র শামসুল আলম দীর্ঘ দিন থেকে এলাকায় নির্বিঘেœ ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের ব্যবসা করে আসছিল। লিখিত অভিযোগে বলা হয় পাখি আকতারের পৈত্রিক বাড়ি টেকনাফে হওয়ার সুবাদে মিয়ানমার থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশে ইয়াবা এনে মহেশখালীতে এসব লোকের মাধ্যমে তা বাজারজাত করে আসছিল। যার ফলে এলাকার উঠতি বয়সী তরুণ সমাজ মাদকের করাল গ্রাসে ভয়ানক অধঃপতনের দিকে চলে যাচ্ছিল। সুচতুর এই চক্রটি তাদের অবৈধ ব্যবসা নিষ্কণ্টক করতে সমাজে মাদক বিরোধী অবস্থানে থাকা সম্মানিত লোকজনের বিরুদ্ধে ফেসবুক ভিত্তিক বিভিন্ন অনলাইনে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে তাদের এহেন সমাজ ও রাষ্ট্র বিরোধী কাজে যাতে কেউ বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায় তার জন্য অপ-তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। এদিকে খাইরুল আমিন ওরফে ইয়াবা হারুণ ও এক সময়ের টমটম ড্রাইভার জাফর এখন ইয়াবা ব্যবসার উপর ভর করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছে। তাদের তৎপরতার তথ্য আগে থেকে প্রশাসন ও গোয়েন্দাদের কাছে ছিল। বিভিন্ন সময় একাধিক দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আস্তানায় হানা দিলেও সুচতুর এই চক্রটি পালিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে মহেশখালী থানার এক দল চৌকস পুলিশ এই আস্তানায় হানা দিলে বাড়ির চালে রাখা গোপন দরোজা দিয়ে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আস্তানা গুড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে তাদের অনেকেই গা ঢাকা দেয়। বড় মহেশখালী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্য কর্তৃক তালিকা আকারে দেওয়া এই অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানিয়েছেন নিরীহ গ্রামবাসী। এ প্রসঙ্গে মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান-তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
অপর দিকে এসএম আনচারুল করিম রাজুর দায়ের করা জিড়িতে বলা হয় -স্থানীয় ইয়াবা ব্যবসায়ী জাফর আলম, খাইরুল আমিন, রহিমা আকতার ও পাখি আকতার চক্র দীর্ঘদিন থেকে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছিল। সমাজের স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তাদেরকে এই অনৈতিক ব্যবসা বন্ধের জন্য প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করে আসছিল তারা। এতে চক্রটি আনচার ছাড়াও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি মনজুর আলম ও সাবেক মেম্বার মমতাজ আহমদের উপর ক্ষুব্দ হয়ে পড়ে। ফলে ইয়াবা ব্যবসায়ী চক্রটি তাদেরকে ক্ষতি করার জন্য নানা ভাবে উঠেপড়ে লেগে।
সম্প্রতি তারা প্রকাশ্যে আনচারের গতিরোধ করে মনজুর আলম ও সাবেক মেম্বার মমতাজ আহমদের নাম উল্লেখ করে হুমকী দেয়। তারা যে কোনো মুহূর্তে তাদেরকে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ যেকোনো ধরণের ক্ষতি সাধন করতে পারে মর্মে সন্দেহ প্রকাশ করে থানায় এমএম আনচারুল করিম রাজু বাদী হয়ে এই জিডিটি করেন। আনচার জানান -আলোচিত এই চার গড় ফাদারের নেতৃত্বে ১২-১৫ জনের এক দল ইয়াবা ব্যবসায়ীর কারণে সমাজের শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষগুলো হুমকীর মুখে পড়েছে। তারা দ্রুত এ নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।