মহেশখালীর ধলঘাটায় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রস্তুতি |
খালেদ মোশাররফ ।।
ঘূর্ণিঝড়
বুলবুলের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী-কুতুবদিয়ায়
গতকাল শনিবার সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় দ্বীপের সাথে সব
ধরণের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মুকাবিলায় সব
ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এ দুর্যোগ উপলক্ষে মহেশখালীতে
বিশেষ ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট
সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও অতি-জোয়ারের কারণে দুই দ্বীপের
নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মহেশখালী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান -ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও অতি-জোয়ারের কারণে দ্বীপের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে তথ্য রয়েছে। এ অবস্থায় দুর্যোগ মুকাবিলায় সম্মিলিত ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম জানান -সম্ভাব্য দুর্যোগ মুকাবিলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৯৬টি সাইক্লোন শেল্টার। শুখনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম নম্বর -০১৭০০ ৭১৬৮৪৮ তাছাড়া লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার জন্য বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংস্থার লোকজনের সমন্বয়ে একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখার জন্য মাঠে কাজ করছে পল্লী বিদ্যুতের একাধিক ইউনিট। তাছাড়া মহেশখালীতে গত রাতেই এ দুর্যোগ উপলক্ষে সরকারি ভাবে ৩০ টন চাল ও ৫০ হাজার নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কুতুবদিয়ায় প্রশাসনের তৎপরতা |
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মীর জানান -কুতুবদিয়ায় মোট ১৪০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খোলা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম। কন্ট্রোল রুমের নম্বর -০১৮৭২-৬১৫১৪০ । কুতুবদিয়া দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হওয়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ারী আলাদা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাত সাড়ে ১১ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। তাছাড়া লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে কাজ করছে পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, রেডক্রিসেন্ট, স্কাউটস ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন স্থানে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার আহ্বান জানিয়ে মাইক দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে শুখনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সমুদ্র বেশ উত্তাল রয়েছে। এ অবস্থায় মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার সাথে সব ধরণের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। তবে মহেশখালী দ্বীপে ও কক্সবাজার শহরে বেশ কিছু লোক আটকা পড়ায় প্রশাসনের উদ্যোগে একটি জাহাজে করে জরুরি ভিত্তিতে লোকজনকে নদী পার করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। শনিবার দিনভর মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের ফলে এলাকায় স্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিতরণ বিঘ্নিত হয়।