Advertisement


সাফল্যের গল্প বললেন মহেশখালীর সন্তান জাতীয় দলের খেলোয়াড় সবুজ

তৌহিদুল আলম সবুজ, প্রথম আলো থেকে।
তৌহিদুল আলম সবুজ। মহেশখালীর সন্তান, দেশের কৃতি ফুটবলার। জন্ম ১৯৯০ সালের ১৪ সেপ্টেস্বর -মহেশখালীর কালারমার ছড়ায়। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সেন্টার ফরোয়ার্ড এর এ খেলোয়াড় তাঁর সাফল্য ও মহেশখালীর ফুটবলের বিভিন্ন দিক নিয়ে মুখোমুখি হয়েছেন মহেশখালীর সব খবর এর সাথে। আজ তার প্রথম পর্ব প্রকাশ করা হলো। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মহেশখালীর সব খবর এর মৃন্ময় মামুন

মহেশখালীর সব খবরঃ  কেমন আছেন?
তৌহিদুল আলম সবুজঃ  আলহামদুলিল্লাহ, সকলের দোয়ায় ভালো আছি।

সবখবরঃ মহেশখালীর মতো গ্রাম অঞ্চলের ছেলে হয়ে জাতীয় ফুটবল দলে স্থান পেয়েছেন এবং ভালো পারফরমেন্সও পেয়েছেন। এর পেছনের গল্পটা যদি একটু বলতেন?
সবুজঃ আমি ছোট বেলা থেকে খেলার পাগল ছিলাম। স্কুল ফাঁকি দিয়ে খেলতে চলে যেতাম -এটা যে কোনো খেলাই হোক। তখনও আমার বাবা আমাকে সাপোর্ট দিতেন। এর পরে আমার খালাম্মা ছিলেন ঢাকায়, ওনি আমাকে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বি.কে.এস.পিতে ভর্তি হওয়ার কথা বলেন বাবাকে। তখন আমি প্রথমে ভর্তি হতে চাইনি, এর কারণ আমি মহেশখালী ছেড়ে পক্ষপাতী নই, মহেশখালীতে থাকাটার প্রতি আমার প্রাণের টান ছিলো বেশী। পরে সবাই অনেকটা জোর করে ভর্তি করিয়ে দেন। বি.কে.এস.পিতে ক্লাস সেভেন এ ভর্তি হই আমি। আমি ওখান থেকেই এস.এস.সি ও এইস.এস.সি পাশ করি। পাশ করার পর ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়ে অনার্স শেষ করি। বিকেএসপিতে থাকাকালেই দেশে এবং দেশের বাইরে অনেক জায়গায় খেলতে যাওয়ার সুযোগ হয়।

সব খবরঃ আপনার এ পথ চলার পেছনে সবচেয়ে কে বেশি সাপোর্ট দিয়েছেন?
সবুজঃ এক কথায় আমার বাবা! আমার বাবার আলহাজ্ব বদরুল আলম আনছারী।

সব খবরঃ আপনার কেরিয়ার সম্পর্কে বলুন। 
সবুজঃ আমি ২০০৫ সালে ইউ-১৬ খেলি, এরপর ২০০৭ সালে ইউ-১৭ এবং ২০০৮ সালে ইউ -১৯ খেলি। সুখের বিষয় হলো যে -সব গুলোতেই আমি অধিনায়ক ছিলাম। এরপরে ২০১০ সালে ইউ -২৩ খেলার পর ওই বছরই মুল দল তথা জাতীয় দলে চান্স পাই।

সব খবরঃ আপনি কোন কোন দেশে খেলতে গেছেন? 
সবুজঃ খেলার জন্য মালদ্বীপ যাওয়া হয়েছে ২বার, লাওস ২ বার, কাতার ২ বার। তাছাড়া খেলার জন্য ওমান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভারতে ১ বার করে যাওয়া হয়েছে।

সব খবরঃ আপনি কোন কোন ক্লাবে হয়ে খেলছেন? বর্তমান কোন ক্লাবের আছেন? 
সবুজঃ আমি ফকিরাপুল ক্লাবে ছিলাম ৩ বছর, তাছাড়া ফরাশগঞ্জ ক্লাব, শেখ জামাল ক্লাবে ছিলাম ৩ বছর, মোহামেডান ক্লাবে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছি ৩ বছর। আবাহনী ক্লাব -চট্টগ্রামের হয়েওে খেলেছি। বর্তমান বসুন্ধরা কিংস-ঢাকার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।

সব খবরঃ দেশীয় সাফল্যগুলো বলুন।
সবুজঃ সাফ গেইম চ্যাম্পিয়ন(২০১০), বাংলাদেশ লীগ চ্যাম্পিয়ন একবার, ফেডারেশন কাফ চ্যাম্পিয়ন একবার, স্বাধীনতা কাফ চ্যাম্পিয়ন একবার, সর্বোচ্চ গোলদাতা দুইবার, বেস্ট ফরওয়ার্ড হয়েছি একবার।

সব খবরঃ আপনার খেলোয়াড় জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কোনটি? এবং কেনো? 
সবুজঃ  আমার খেলোয়াড় জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিলো -সাফ গেইমস ২০১০। সেমিফাইনালে ভারত এর সাথে ছিলো ম্যাচটা। এর কারণ আমরা ওই ম্যাচ ১ গোলে জয়লাভ করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছিলাম, আর ওই গোলটা করি আমি নিজেই। সুখের বিষয়তো!

সব খবরঃ মাঠের কোন স্থানে খেলেন? এবং ওই স্থানটি কিভাবে আয়ত্ত করেছেন?
সবুজঃ আমি খেলি ফরওয়ার্ড পজিশনে। আমার গোল করতে এবং করাতে ভাল লাগে তাই। অবশ্যই অনেক পরিশ্রম করে আয়ত্ত করেছি।

সব খবরঃ আমরা জানি আপনি সাম্প্রতিক জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন, কেমন লাগছে বিষয়টি ?
সবুজঃ হ্যাঁ, দেশের জন্য খেলতে আমার সব সময়ই ভালো লাগে।

সব খবরঃ বাংলাদের অধিকাংশ মানুষ বিশ্ব ফুটবলের দুইটি টিমকে সাপোর্ট করে, আর তা হলো -ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। আপনি কোন দলের সাপোর্টার?
সবুজঃ আর্জেন্টিনা।

সাক্ষাতকালে সবুজ ও মৃন্ময়
সব খবরঃ বিশ্বের ফুটবল তারকাদের মধ্যে আপনার প্রিয় কে?
সবুজঃ অবশ্যই লিওনেল মেসি।

সব খবরঃ এবার মহেশখালীর কথায় আসি! মহেশখালীর ফুটবলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে যতটুকু জানেন -বলুন এবং মহেশখালী ফুটবলের ভবিষ্যৎ এর জন্য আপনার পরামর্শ কি ।
সবুজঃ আমাদের মহেশখালীর মানুষ সব সময় ফুটবলের পাগল। আমি ছোট বেলা থেকে তা দেখে আসছি, আমি শুনেছি আমার বাবাদের সময়ও তা ছিল। আর এখন আমি নিজে দেখতেছি, আমি এক কথায় বলবো সারা বাংলাদেশে মহেশখালী উপজেলার মত এত ফুটবলের পাগল আমি আর কোন জায়গায় দেখিনি। পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে ফুটবলে মহেশখালী উপজেলার ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল, আমি তা দেখতেছি।

সব খবরঃ মহেশখালী উপজেলার কোন মাঠে খেলতে আপনার ভালো লাগে?
সবুজঃ আমার উত্তর নলবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খেলতে ভালো লাগে। এখানেই আমার শৈশব মিশে আছে।

সব খবরঃ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, পরে আবার কথা হবে, দেখা হবে। ভালো থাকবেন।
সবুজঃ আপনাকেও ধন্যবাদ, আপনাদের মহেশখালীর সব খবর এর কর্মী ও পাঠকদের প্রতিও রইলো অশেষ শুভ কামনা।