Advertisement


মহেশখালীর শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ইংরেজি বই "কোয়েস্ট ফর কোয়ালিটি প্রাইমারি এডুকেশন"



জামাল জাহেদ

এবার একুশে বই মেলায় বের হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ লিখিত ইংরেজি বই “বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন: কোয়েস্ট ফর কোয়ালিটি”। বাংলায় বলা যায়, ‘বাংলাদেশে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার সন্ধানে’। এ বইটি পড়ে পাঠক মহল বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার একটি বাস্তব চিত্র জানতে পারবেন।

আমাদের দেশের শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী মহল, লেখক-কলামিস্টগণ উচ্চ শিক্ষা নিয়ে যত ভাবেন বা লিখেন, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তার তুলনায় খুব কম আলোচনা করেন। অথচ হওয়ার কথা উল্টোটা। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষাস্তরই শিক্ষার আসল ভিত্তি ভূমি।

লেখক সেদিকটিই তাঁর ইংরেজি বইতে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মঞ্জুর হোসেনের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক গবেষণা অতি উচ্চমার্গীয়। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী তাঁর গণস্বাক্ষরতা নামক এনজিও এবং অন্য কিছু সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আর তারা এসব নয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকেন, প্রতি বছর।
কিন্তু স্বাধীনতার পর হতে প্রাথমিক শিক্ষা কতটা এগিয়েছে, সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সমূহই বা কি কি? প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্যই বা কি? বাংলাদেশ সরকার যে প্রাথমিক শিক্ষা খাতকে বিশ্ব দরবারে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, সে খবরই বা জানে ক‘জন।

এসব প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করা হয়েছে, এ বইতে। প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে একেবারে অন্দর মহলের খবর জানতে পারবেন, এ বইয়ের পাঠকগণ। সহজ-সরেস ইংরেজি ভাষায় রচিত বইটির লেখক একজন উপজেলা পর্যায়ের সাধারণ কর্মকর্তা। তাঁর রয়েছে ১৭ বছর ধরে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা। তাঁর পর্যবেক্ষণ অতি তীক্ষ্ণ এবং এতে রয়েছে, পুরোপুরি ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার প্রয়াস। বিশেষত: বাংলেদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং প্রত্যন্ত এলাকার শিশুরা কীভাবে প্রাথমিক শিক্ষা পাচ্ছে, তার চিত্র লেখক তার মত করে দেখেছেন এবং পাঠক সমুখে তা তুলে ধরেছেন।

লেখকের রয়েছে, সুনামগঞ্জের হাওর এলাকা দিরাই উপজেলা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার রাজস্থলী এবং দ্বীপাঞ্চল মহেশখালী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। এসব এলাকার শিশুদের মানসম্মত প্রাথমিক নিশ্চিতকরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের সুফল জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে তিনি সদা সচেষ্ট থাকেন। শিক্ষকদেরকে পেশাগতজ্ঞানে সুদক্ষ করে গড়ে তোলা, তা অনুশীলনে নিপুণ করে তোলা এবং শিশুদেরকে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শন করাতে উদ্বুদ্ধকরণ এবং তাঁদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে সদা উৎসাহিত করার নিত্য প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন, তিনি ।

আর তিনি তা করেন, শিক্ষকগণকে বিবিধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং নানা বিষয়ে লেখা-লেখির মাধ্যমে। তিনি সাধারণ একজন কর্মকর্তা বটে, কিন্তু তাঁর ভাবনা অত্যন্ত গভীর ও সুদূর প্রসারী। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘সোনার বাংলায়, সোনার মানুষ গড়া’র কারিগরদের শিক্ষক, প্রশিক্ষক এবং নিজেও কারিগরের ভূমিকায় অবতীর্ণ। এসব তিনি ভাবনায়, তিনি সদা বিভোর থাকেন। আর লিখে চলেছেন, নিত্যই। দেশ-জাতির প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ-হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে শিক্ষকমন্ডলীকে সবসময় অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ যোগান এ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি, নিজে ডিজিটাল অফিসারসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ ও কাজ করে তা প্রমাণ করে চলেছেন, নিত্যদিন। তাঁর প্রত্যাশা, তাঁর প্রথম বই ‘বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা: শিক্ষকতায় সৃজনশীলতা’ (বাংলা) এবং দ্বিতীয় বইটি(ইংরেজি) সর্বস্তরের পাঠক মহলে ইতোমধ্যে বেশ সমাদৃত হয়েছে।