Advertisement


অর্থনীতির নতুন যুগে বাংলাদেশ, মহেশখালীর এসপিএম থেকে তেল খালাস শুরু


রকিয়ত উল্লাহ।।
মহেশখালীর কালারমার ছড়ার এসপিএম প্রকল্পে সাগরের তলদেশে এই প্রথম পাইপলাইনের মাধ্যমে তেলবাহী ট্যাংকার থেকে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে।


রোববার (২ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আগে বিকেল ৪টায় বঙ্গোপসাগরের বহিঃনোঙ্গরে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের সঙ্গে জাহাজটির পাইপলাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়।  বিষয়টি নিশ্চিত করেন- এসপিএম প্রকল্পেরবিষয়টি নিশ্চিত করেন এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত।  

 
সূত্রে জানা যায়, জাহাজটি (ট্যাংকার) বঙ্গোপসাগরে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ে (ভাসমান জেটি) নোঙর করে, সেখান থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ১১৬ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালী ও আনোয়ারা হয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় জ্বালানি তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে এ তেল। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড। তা ছাড়া ১২ দিন আগে জাহাজটি নোঙ্গর করলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এসব তেল খালাস করা সম্ভব হয়নি।

কর্ণফুলী নদীতে তেল খালাসের বিশেষায়িত জেটিতে বড় ট্যাংকার ভিড়তে না পারায় জ্বালানি তেল নিয়ে আসা বড় ট্যাংকারগুলো সনাতন পদ্ধতিতে প্রথমে সাগরে নোঙর করে রাখা হতো। এরপর ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে পাইপের মাধ্যমে তেল খালাস করা হতো। এতে এক লাখ টন তেলবাহী একটি ট্যাংকার থেকে তেল খালাসে ১০ দিন বা তারও বেশি সময় লাগত। এতে তেল খালাসে খরচ ও সময় বেশি লাগায় ২০১৫ সালে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। নতুন প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় এক লাখ টন জ্বালানি তেল খালাস সম্ভব হবে।

জ্বালানি তেল খালাসের জন্য ভাসমান জেটিতে ট্যাংকার ভিড়ানো, টাগবোটসহ যাবতীয় সহায়তা দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, প্রকল্পটির আওতায় ১১৬ কিলোমিটার লম্বা দুটি সমান্তরাল পাইপলাইন বসানো হয়েছে। একটি পাইপলাইন দিয়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাস শুরু করা হলো আজ। অন্য পাইপলাইন দিয়ে শিগগিরই পরিশোধিত ডিজেল খালাস শুরু হবে। এর মাধ্যমে ৮২ হাজার টনের বিশাল এ তেলের চালান মাত্র দুই দিনেই খালাশ করা সম্ভব। যা আগে লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যসে খালাস করকে সময় লাগত ১২-১৪ দিন। এতে বছরে প্রায় ৮শ থেকে হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

স্মার্ট বাংলাদেশে, স্মার্ট প্রযুক্তিতে দেশের অর্থনীতিতেও বিশাল সফলতা আসবে বলেও জানান তিনি।

বন্দর সূত্রে আরও জানা গেছে, মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে উপকূল থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জেটি বা সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং স্থাপন করা হয়েছে। এই ভাসমান জেটি থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে প্রথমে তেল নিয়ে আসা হবে কালারমারছড়ায় পাম্প স্টেশন ও ট্যাঙ্ক ফার্মে। সেখানে দুই লাখ টন ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাংক রয়েছে। সেখান থেকে ৭৪ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আনা হবে আনোয়ারার সমুদ্র উপকূলে। সেখান থেকে ৩৮ কিলোমিটার পাইপলাইন পাড়ি দিয়ে তেল নেওয়া হবে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে।

এবিষয়ে কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক বলেন - দেশে প্রথম বারের মতো মহেশখালীর ভূকন্ড ব্যবহার করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এসপিএম প্রকল্পে তেল খলাস ও রিফাইনারির মাধ্যমে
সরকারের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং বিপদকালীন সময়ে স্টকে রিজার্ভ তেল সরবরাহ রাখতে বিরাট ভূমিকা পালন করবে।