জানা গেছে- বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। খাইরুল বশর সুমন মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপের মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে। সমুন প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের একজন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস।
তিনি জানান, গ্রেফতারের পর সুমনকে কক্সবাজারে আনা হয়েছে। গত ২৩ এপ্রিল ১০ মরদেহ উদ্ধারের পর সুমন আত্মগোপনে চলে যান। এরপর পরিচয় গোপন করতে মুখে দাড়ি রেখে তিনি ছদ্দবেশ ধারণ করেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।
সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন অস্ত্র-সরঞ্জাম ও অর্থযোগান দিয়ে ৭ এপ্রিল ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপকে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ঘটনায় নিহত ট্রলার মালিক শামসুল আলম মাঝি।
পুলিশ জানিয়েছে- সুমনকে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন পুলিশকে বলেন ‘আমি তাদের ডাকাতি করতে পাঠিয়ে ছিলাম, মারার জন্য না।’
গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন ট্রলারটিকে নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। পুলিশ এ মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেন।
তারা হলেন, মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
তবে গ্রেফতারদের মধ্যে মামলার ৪নং আসামি করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন জবানবন্দি দেননি।
ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, এ ঘটনার পর তদন্তে দস্যু সর্দার সুমনের নাম নানাভাবে আসতে থাকে। এরপর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতারে নানাভাবে অভিযান শুরু করে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।