প্রেস বিজ্ঞপ্তি।। কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ১০ দফা দাবি মেনে না নিয়ে ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা না করে ১১০ টাকার ভাড়া ১০৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্র-জনতা।
এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বৈষম্যের বিরুদ্ধে মহেশখালীর ছাত্রজনতা প্রতিনিধিরা বলেন, ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে কোন ধরনের পদক্ষেপ না নিয়ে প্রশাসন শুধুমাত্র ভাড়া কমানোর যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছে সেটি আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। সেই সাথে সোমবারের মধ্যে প্রশাসনকে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের অনুরোধ করেন তারা। না হলে আগামী মঙ্গলবার কক্সবাজার শহরের ঘুণগাছতলায় তারা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতি, নৈরাজ্য ও লুটপাট বন্ধে ছাত্র-জনতার উত্থাপিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত জনপ্রতি স্পিডবোট ভাড়া ১১০ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১০৫ টাকা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছে মহেশখালীর ছাত্র-জনতা। এমন অবস্থায় কক্সবাজার শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্র-জনতা।
দেশবাসীর উদ্দেশে ছাত্রজনতা বলেন, কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে কতিপয় সিন্ডিকেট প্রশাসনের সহযোগিতায় মহেশখালীর মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। ৭০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে এখন স্পিডবোট ভাড়া ১১০ টাকা। যা সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব না। ১১০ টাকার মধ্যে ১০ টাকা রাজস্ব হিসেবে নিয়ে নেয় জেলা প্রশাসন। এছাড়া ৬ নং ঘাটে ৫ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। আসা-যাওয়াতে ৩০ টাকা রাজস্ব দিতে হয় একজন যাত্রীকে। এছাড়াও ঘাটে অনিয়ম, দুর্নীতি চরম পর্যায়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে নতুন বাংলাদেশে এখনো বৈষম্য করে যাচ্ছে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটের সিন্ডিকেটটি। যাদের সাথে প্রশাসনও ভাগবাটোয়ারা করে খাচ্ছে । এমন অবস্থায় এই রুটের নৈরাজ্য বন্ধ করতে কক্সবাজারে অবস্থানরত ছাত্রদের একটি টিম তিন দফা বৈঠকে বসে জেলা প্রশাসনের সাথে। কিন্তু জেলা প্রশাসন স্পিডবোট মালিকদের সাথে ম্যানেজ হয়ে ছাত্র-জনতার যৌক্তিক দাবি আদায়ে সাড়া দেয়নি। এমন অবস্থায় আগামী সোমবারের মধ্যে ছাত্র-জনতার দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে "বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা"।
যাত্রীদের উদ্দেশে ছাত্রজনতা বলেন,এটা শুধু মহেশখালীবাসীর সমস্যা নয়। এটা কক্সবাজারের সকল জনগণ এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশি যাত্রীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে আপনাদের একাত্মতা এবং সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
ছাত্রজনতার দাবি সমূহ:
১. কক্সবাজার-মহেশখলী নৌরুটে স্পীডবোট ভাড়া জনপ্রতি ৯০টাকা করে ১০ জন যাত্রী পরিবহণ করতে হবে।
২. দ্রুত গণপরিবহণ চালু করতে হবে। অর্থাৎ কাঠের তৈরী মাঝারি সাইজের লঞ্চ সার্ভিস চালু করতে হবে। যেখানে যাত্রী ছাউনীসহ লোকজন বসার জায়গা থাকবে।
৩. গামবোট হচ্ছে মালবাহী বোট। এগুলো নিয়ে যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। সাময়িক সময়ের জন্য (যতদিন গণপরিবহন চালু হবে না) ৪০জন যাত্রী নেয়া যাবে। ভাড়া নিতে হবে জনপ্রতি ৩০টাকা।
৪. মহেশখালী-চৌফলদন্ডী নৌরুটে গামবোটে ৩০জন যাত্রী পরিবহণ করবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২৫ টাকা।
৫. সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্পীড বোট এবং রাত ১০টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যাত্রী সুবিধার জন্য টয়লেট, সুপেয় পানি, বসার স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. ঘাটে টিকিট সিস্টেম চালু করতে হবে। সেইসাথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে তদারকি করাসহ প্রত্যেক বোট চালকদের ছবি সম্বলিত পরিচয়পত্র পরিধান ও বোটের নাম্বার স্থাপন করতে হবে।
৭. মহেশখালী ঘাটে বিনা টোলে দ্রুত যাত্রীসেবার পন্টুন স্থাপন করতে হবে।
৮. ঘাটে ভিআইপি প্রথার নাম করে কাউকে বাড়তি সুবিধা দেয়া চিরতরে বন্ধ করতে হবে। অসুস্থ রোগীদের প্রাধান্য দিতে হবে।
৯. ফিটনেস বিহীন বোট দ্রুত যাছাই করে নৌপথ থেকে তুলে ফেলতে হবে।
১০. পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট রাখতে হবে। এবং যাত্রীদের মাঝে লাইফজ্যাকেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে।