Advertisement


সোনাদিয়ার বরইগাছতলা পয়েন্টে বিশাল এলাকাজুড়ে নতুন করে বন কাটা হচ্ছে, আজ দেয়া হবে ১'শ শ্রমিক


রকিয়ত উল্লাহ ।। প্রশাসনের সাম্প্রতিক অভিযানের পরও মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে সরকারের সুরক্ষিত প্যারাবন কেটে এবং সরকারি জমি দখল করে চিংড়ি ঘের তৈরির মহোৎসব চলছে। দ্বীপের পূর্ব পাড়ার বরইগাছ তলা এলাকায় প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্রমিক লাগিয়ে বন ধ্বংস করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড় মহেশখালীর সাবেক ইউপি সদস্য মো. ছফি, সোনাদিয়ার মো. হোসেন, আন্জু মিয়া, ছোট মিয়া ও কুতুবজোমের এক নতুন নেতাসহ অন্তত ১৫–২০ জন ভূমিদস্যু এ কাজে সরাসরি জড়িত। তাদের নির্দেশে প্রতিদিন ৫০–১০০ জন শ্রমিক দিয়ে গাছ কেটে ফেলা হয়। পরে শুকিয়ে গেলে আগুন দিয়ে জমি ফাঁকা করা হয়। এরপর বাঁধ তুলে বিশাল চিংড়ি ঘের তৈরির কাজ চলে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বড় মহেশখালী ও কুতুবজোম থেকে আনার জন্য প্রায় ১০০ শ্রমিককে জনপ্রতি এক হাজার টাকা মজুরিতে ঠিক করা হয়েছে। এ শ্রমিকদের দিয়ে আজ সকাল থেকে প্যারাবন কাটা, বাঁধ নির্মাণ ও জ্বালানি ছিটিয়ে বন পুড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে চক্রটি।

সম্প্রতি বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তিনটি অবৈধ চিংড়ি ঘের ও অস্থায়ী স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলেও মূল হোতাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগে অভিযানের অল্প সময় পরই প্রভাবশালীরা আবার বাঁধ সংস্কার ও প্যারাবন কেটে ঘের তৈরির কাজ শুরু করেছে। ফলে অভিযান কার্যত ফলপ্রসূ হয়নি।

পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, প্যারাবন উজাড় হলে উপকূল সরাসরি ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আঘাতের মুখে পড়বে। একই সঙ্গে বহু মাছ, কাঁকড়া, শামুক ও পাখির আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে, মাটির স্বাস্থ্যও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আইনজীবী সংগঠন বেলা ইতিমধ্যে এ ঘটনায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে। তাদের দাবি, মহেশখালী ও সোনাদিয়ায় অন্তত দশ হাজার একরের বেশি প্যারাবন অবৈধভাবে দখল হয়ে গেছে। বহু মামলা হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিচার হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এই দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে না। তারা দ্রুত নতুন করে বন ধ্বংস করে তৈরি হওয়া চিংড়ি ঘের এলাকায় বন বিভাগের কঠোর অভিযান ও সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার দাবি করেছেন।