বিশেষ সংবাদদাতা।। মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নে পুলিশের ওপর হামলা করে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুমকে হাতকড়া পরা অবস্থায় শ্রমিক দলের নেতারা কেড়ে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে করা মামলায় শ্রমিকদল সভাপতিসহ ৩জন গ্রেফতার হয়েছে।
পুলিশ জানায়- নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের লোকজন সরকার বিরোধি মিছিল করার প্রস্তুতিকালে পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও মাতারবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কাইয়ুমের বড় ভাই মাতারবাড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সোমবার রাতে মাতারবাড়িতে ছাত্রলীগ মিছিলের প্রস্তুতি নিলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপস্থিত লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি কাইয়ুমকে গ্রেফতার করে। পরে কাইয়ুমের বড় ভাই মাতারবাড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে তাদের অনুসারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে পুলিশকে আহত করে ছাত্রলীগ সভাপতি কাইয়ুমকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে ওই ইউনিয়ের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি মেম্বার ফিরুজ আহম্মেদের মাধ্যমে খোয়া যাওয়া হাতকড়া ফেরত পায়।
তবে তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশ তাদের উপর হামলার বিষয়টি জানালেও হাতকড়া খোঁয়া যায়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ঘটনার পর রাত ৩টার দিকে মাতারবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইন-চার্জা এসআই সুমিত বড়ুয়া জানান- ঘটনার পর ক্যাম্পের সকল পুলিশ সদস্যকে থানার সরিয়ে এনে আহত সদস্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মহেশখালী থানার সেকেন্ড অফিসারের নেতৃত্বে মাতারবাড়িতে অভিযান চলছে এবং মূলহোতাসহ ৩জন গ্রেফতার হয়েছে, হতকড়া পুলিশের হেফাজতে আছে।
এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা পুলিশ বাদি হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে মামলা করেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়- রাতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ সরকার বিরোধী মিছিলের চেষ্টা করলে মাতারবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মো. হারুন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুমকে গ্রেফতার করে সিএনজিচালিত টেক্সিযোগে পুলিশ ক্যাম্পের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছিল। পরে পুলিশ দল স্থানীয় নতুন বাজার সিএনজি স্টেশন এলাকায় পৌঁছলে ছাত্রলীগ নেতা কাইয়ুমের ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন লোক পুলিশের গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দেয়। এ সময় পুরিশকে "মারধর করে গুরুতর জখম করে" গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতাকে (আসামি) ছিনিয়ে নেয়। দীর্ঘ সময় পরে খবর পেয়ে এসআই সুমিত বড়ুয়ার নেতৃত্বে আরেকদল পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের কবল থেকে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার কর মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূলহোতা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, মীর মোশাররফ হোসেন পারভেজ ও রোকন উদ্দীন নামের ৩ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন। তবে ছিনিয়ে নেওয়া ছাত্রলীগ নেতা কাইয়ুমকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলাটি তদন্ত করছেন মহেশখালী থানার এসআই মো. মোজহারুল ইসলাম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার ওসি মো. মঞ্জুরুল হক জানান- ঘটনার সাথে আরও যারা সম্পৃক্ত আছে তাদেরকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।
তবে গ্রেফতার হওয়া শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুনের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের দাবি সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা এ ঘটনার নিন্দা জানায়।