Advertisement


হোয়ানকের সেই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

 


শাহেদ মিজান।।

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে আটক মহেশখালীর হোয়ানক আব্দুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক (বরখাস্ত) জয়নাল আবেদীনের মামলারদায়ের করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে আজ শুক্রবার দুপুরের মামলাটি দায়ের করেন।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল হাই সিবিএনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এজাহার মতে,  ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর ও এর পরদিন দুই দফায় সপ্তম এক শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে তাতে শারীরিকভাবে যৌন হয়রানি করে। বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাকে মানাত্মক বিপর্যস্ত হয়ে ওই ছাত্রী তার মাকে জানায়। মা প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ছাড়া আশ্বাস দিয়েও এই চরিত্রহীন শিক্ষক জয়নাল আবেদীনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো তাকে প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার লোকজন জয়নাল আবেদীনের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছিলো। তারপরও প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য ওই ছাত্রীর মা থানায় এজাহার দায়ের করেন।


হোয়ানক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জানান,

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শিক্ষক জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে গত ২৭অক্টোবর। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে হোয়ানক পুলিশ  অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ৩০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৬টার সময় হোয়ানক কেরুণতলীস্থ কদমতলী এলাকার ভাড়া বাসা থেকে জয়নাল কে আটক করে। জয়নালের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা জেলার কৃষ্ণপুর এলাকায়। সে কৃষ্ণপুরের ছৈয়দ আহমদের ছেলে। বর্তমানে জয়নাল হোয়ানক কেরুণতলীস্থ কদমতলী গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকে।


এদিকে, আরো বহু ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আসছে। কিন্তু সম্মান হানির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে অভিযোগ করছে না। তিনি দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন  ব্যক্তির প্রশ্রয় পেয়ে এই শিক্ষক অপকর্ম চালিয়ে এসেছিলো। এতে এলাকায় তিনি পরিমল নামে উপাধি পেয়েছেন।


অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই শিক্ষক নামধারী জয়নাল আবেদীন কেরুনতলী আবদুল মাবুদ উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি শুরু করে। বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ, ওয়াশরুম, বাথরুমসহ নির্জন স্থানে সুযোগ পেলেই বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতো এই জয়নাল আবেদীন। এমনি নিজে যেছে ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে পড়াতে যেতেন তিনি। বাড়িতেও ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতো বলে অনেক  অভিযোগ রয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে অনেক ছাত্রী বিদ্যালয় ত্যাগ অন্যত্র চলে গেছে।


বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন জানান, স্থানীয় মেম্বার আবুল হাশেম, তার চাচা কাদের বক্সু, ভাই আলম, জাগির হোসেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনসার ও কেরানী শাহাদাতসহ একটি সিন্ডিেকট যৌন নিপীড়ক শিক্ষক জয়নালকে বাঁচাতে নানা দেনদরবার করেছেন। তারা বিভিন্নভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এমনকি বরখাস্ত হওয়ার পরও তাকে পক্ষ নিয়েছে ওই সব ব্যক্তিরা। এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরও এই চরিত্রহীন শিক্ষককে আবারো বিদ্যালয়ের পদায়ন করার অপচেষ্টা করছে ওই চক্র।  এতে এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে।