Advertisement


মাওলানা জিয়াউর রহমান হত্যা কান্ডের নেপথ্য কি?


আবুল বশর পারভেজ।।
কুতুবজোমের ৩নং ওয়ার্ড় তাজিয়াকাটা গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টার পর, ১৯৯১সালের পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদীয়া মাদরাসা নামে একটি এবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্টা করেন তাজিয়াকাটা গ্রামের মরহুম সাহেব মিয়ার পুত্র মাওলানা জিয়াউর রহমান।এটি বেশ কযেক বছর জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল।

পরবর্তীতে ২০০৫সালে কক্সবাজার ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ জাফর উল্লাহ নুরী মোহাম্মদীয়া মাদরাসার জমি ও স্থিত টিনশেড এর জায়গায় তাজিয়াকাটা সুমাইয়া (রাঃ) বালিকা দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা স্থাপন করে। সে মাদরাসায় জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী রহিমা বেগম শিক্ষকতা করেন। দাখিল ক্লাসের কিছু শিক্ষক নতুন ভাবে এমপিও ভূক্ত হলে নতুন কমিটি জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রীকে শিক্ষকতার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।

তখন হতে মাদরাসা কমিটির সাথে মোহাম্মদী মাদরাসার জমি সংক্রান্ত একটি চরম বিরোধ তৈরী হয়। মোহাম্মদী মাদরাসার জমি ও  টিনশেড এর জন্য মাওলানা জিয়াউর রহমানকে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে ভাড়া প্রদান করে আসছিল কমিটি। বিগত কয়েক মাস থেকে তাকে ভাড়া পরিশোধ করেনি কমিটি। ভাড়ার টাকা শিক্ষকদের বেতন থেকে কর্তন করে প্রদান করার কারণে কিছু শিক্ষক জিয়াউর রহমানের প্রতি চরম অসন্তোষ ছিল।জিয়াউর রহমানের পিতা মরহুম সাহেব মিয়ার ৩স্ত্রী,১৪ছেলে ও ৮ মেয়ে সন্তান আছে। তাদের মধ্যে প্রায় শিক্ষিত।তাজিয়াকাটা গ্রামে তাদের পরিবারের মাধ্যমে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্টান গড়ে উঠে।

সুমাইয়া (রাঃ) বালিকা মাদরাসায় চাকুরী বঞ্চিত হওয়া  বেশ কিছু শিক্ষক মিলে মাওলানা  জিয়াউর রহমানের  ভাইপো মাওলানা নছর উল্লাহ ২০১৬ সালে একটি নতুন ভাবে দারুল হেদায়া নূরানী তালিমুল কোরআন মাদরাসা ও হেফজখানা নামে একটি প্রতিষ্টান চালু করে। ফলে সুমাইয়া (রাঃ)বালিকা মাদরাসার শিশু শিক্ষার্থী কমতে থাকে ফলশ্রুতিতে সুমাইয়া বালিকা মাদরাসা কমিটির পক্ষের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়। তাদের বিরোধ নীরবে চরম আকার ধারন করে।

গত বছর দারুল হেদায়া নুরানী মাদরাসার বার্ষিক সভার টাকা উত্তোলনের বিষয় নিয়ে স্থানীয় লালুর বর পক্ষের মহিউদ্দিনের সাথে নূরানী মাদরাসার প্রতিষ্টাতা মাওলানা নছর উল্লাহ,র মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়। মাওলানা জিয়াউর রহমান তখন এঘটনা  নিষ্পত্তী করতে ভাইপো নছর উল্লাহ,র পক্ষ নেয়।
টাকার হিসাবকে  কেন্দ্র করে বিগত ৩ মাস পূর্বে জিয়াউর রহমান পক্ষের লোকজন মহিউদ্দিন পক্ষের শেফায়াত উল্লাহ কে রক্তাক্ত করে। এঘটনায় জিয়াউর রহমানকে প্রধান আসামী করে ১১জনের বিরুদ্ধে মামলা করে মহিউদ্দিন পক্ষ। এ মামলায় জিয়াউর রহমান ছাড়া সকলে জেল কেটে জামিনে মুক্ত হয়।পরবর্তীতে লালুর বর পক্ষের এবাদুল্লাহ,শরাফত,মহিউদ্দিন গংরা
জিয়াউর রহমান পক্ষের ৬টি মহিষ লুটপাট  ও বাড়ী ঘরে হামলা চালায়। লুটকরা ৬টি মহিষ চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামালের নিকট জমা দেয়।পরবর্তীতে   চেয়ারম্যান বিচার করবে বলে কালক্ষেপন করতে করতে তাদের মহিষ ফেরৎ দেয়নি বলে অভিযোগ তুলে ভূক্তভোগি পরিবার।সে ঘটনায় কোন মামলা না পারায় হতাশ হয়ে পড়ে জিয়াউর রহমানের পরিবার। মহেশখালী থানায় জিয়াউর রহমান পক্ষের ৩টি মামলা রুজু হলে ও পুলিশ একজন আসামীও গ্রেফতার না করায় লালুর বর  পক্ষের লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠে। যার কারনে পরিকল্পিতভাবে দিন দুপুর প্রকাশ্য মাদরাসার ক্যাম্পাসে জিয়াউর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করে বলে দাবী করেন নিহত জিয়াউর রহমানের পরিবার।

মহেশখালী থানা পুলিশের অসহযোগিতা,স্থানীয় চেয়ারম্যান শেখ কামালের উদাসিনতা,সুমাইয়া (রাঃ)বালিকা মাদরাসা কমিটির নিস্ক্রিয়তা, শিক্ষকগণের চরম পক্ষপাত অবস্থানের কারনে দিন দুপুরে এ হত্যা কান্ড সংঘটিত হয় বলে মহেশখালী থানার ওসির নিকট নিহত মাওলানা জিয়াউর রহমানের পরিবার মৌখিক অভিযোগ তুলে আহাজারি করেন।